মমি ব্রাউন: মমি থেকে তৈরি হতো যে রং

ছবি: বিলিভ ইট অর নট

১২০০ থেকে ১৭০০ শতাব্দীর দিকে ছোটখাটো ক্ষত থেকে শুরু করে যকৃতের ব্যথার মতো বহু রোগের উপশমে ব্যবহার করা হতো মমি চূর্ণ বা মমি পাউডার। ভিক্টোরিয়ান যুগে এর ব্যবহার এতটাই বেড়ে যায় যে, বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে অ্যালকোহল বা চকলেটের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়ানো হতো মমি পাউডার। 

ছবি: বিলিভ ইট অর নট

রঙের কারণে মনে করা হতো মমি পাউডারে রোগ নিরাময়ের উপাদান আছে। কয়েক হাজার বছর ধরে ডেড সী থেকে সংগ্রহ করা কালো রংয়ের বিটুমিন (পিচ) চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। এরপর থেকে ইউরোপীয়রা বিশ্বাস করতে শুরু করে, কিছু কিছু মমির শরীরের কালোবর্ণ ধারণ করার পেছনে গাঢ় রঙের পদার্থটির ভূমিকা রয়েছে। তখন থেকেই শুরু মমি ব্রাউনের। 

১৮৭৫ সালে একজন মিশরীয় মমি বিক্রেতা মমি ও মমি সংরক্ষণের পাত্র নিয়ে বিক্রির অপেক্ষায়। ছবি: বিলিভ ইট অর নট

মমির শরীর থেকে তৈরি পাউডারের সঙ্গে সাদা পলিমার ও গন্ধরস মিশিয়ে তৈরি করা হতো মমি ব্রাউন। এটির রং এতটাই গাঢ় হতো যে মমি ব্রাউনে আঁকা ছবিতে আলাদা মাত্রা যোগ হতো। বিশেষ করে চকচকে ভাব এবং আলো-ছায়ার খেলা ফুটিয়ে তুলতে এর জুড়ি ছিল না। তাই চিত্রশিল্পীরাও বেশ কদর করা শুরু করেন মমি ব্রাউনের। 

অ্যাডওয়ার্ড বার্ন-জোন্সসের দ্য লাস্ট স্লিপ অব আর্থার ইন অ্যাভন ছবিটি কি মমি ব্রাউন রংয়ে আঁকা? ছবি: বিলিভ ইট অর নট

এ রংয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছতা থাকায় নানান ধরনের কাজে ব্যবহার হতো। একটা তৈলচিত্রকে চাকচিক্যময় করার পাশাপাশি মানুষের শরীরের ছবি আঁকতে যথাযথ রঙ পাওয়ার জন্য মমি ব্রাউনের ব্যবহার শুরু হয়।

তবে, সে সময় অনেকেই জানতেন না মানুষের শরীরের ছবি আঁকতে ব্যবহৃত ওই বিখ্যাত রঙের পেছনে রয়েছে সত্যিকার কোনো মানুষেরই শরীরের অংশবিশেষ।

১৯৬০-এর মাধামাঝি এই মমি ব্রাউন উৎপাদন বন্ধ করা হয় শুধু মমি সংকটের কারণে। একটি রং প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সি রবারসন এ বিষয়ে টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, 'রং উৎপাদনের জন্য মমির যোগান যথেষ্ঠ নয়।'

রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট থেকে অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া।

 

Comments

The Daily Star  | English

Democracy ends where leadership begins

The Daily Star analysis of 25 political parties

12h ago