অতিরিক্ত মজুরিতেও মিলছে না শ্রমিক, ধান কাটা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
অতিরিক্ত মজুরি এবং শ্রমিক সংকটের কারণে সময় মতো বোরো ধান কাটা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন চট্টগ্রামের কৃষকরা।
তারা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে বোরোর আবাদ ভালো হয়েছে। কিন্তু, ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, সংকটে পড়েছেন তারা। এদিকে বৃষ্টিও শুরু হয়ে গেছে, তাই পাকা ধান জমিতে নষ্ট হতে পারে।
হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রাজা রাম বিলের কৃষক মো. সেলিম বলেন, 'আমি ৫০ শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছি। ঈদুল ফিতরের আগে থেকে ধান কাটতে চাচ্ছি। কিন্তু, শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। আমার পাকা ধান ঝরে পড়ছে।'
আরেক কৃষক মো. হাবিব বলেন, 'হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটার জন্য আমরা হারভেস্টারের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু, হারভেস্টার মালিক আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। বার বার অনুরোধ করার পরও হারভেস্টার মালিক ধান কাটতে আসেননি। এই ব্যাপারে কৃষি বিভাগ কোনো ধরনের সহযোগিতা করছে না।'
এ বিষয়ে জানতে হারভেস্টার মালিক মো. আবদুল আজিজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ফটিকছড়ি উপজেলার সুয়াবিলের কৃষক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সবদিক থেকে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।'
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে ৬৫ হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ২৬টি হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার উপজেলায় ৫টি হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। কিছুটা শ্রমিক সংকট থাকলেও আমরা কৃষকদের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে বলছি। এতে খরচও কমবে।'
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, 'ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।'
শ্রমিক সংকটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা কৃষকদের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। কারণ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ছাড়া কৃষিকাজ জটিল হয়ে উঠছে। কৃষক যেন নির্বিঘ্নে বোরো ধান ঘরে তুলতে পারেন সেজন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'
Comments