উপকূলে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বাঁচাচ্ছে জীবন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বাড়ছে লবণাক্ততা। এতে খাবার পানির সংকট তীব্রতর হচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় বাগেরহাটে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে শরণখোলা উপজেলায় গত ২৬ এপ্রিল থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপজেলার ধান সাগর গ্রামের বাসিন্দা আফসার শেখ বলেন, লবণাক্ততার কারণে আমাদের এলাকায় কোনো ডিপ টিউবওয়েল বসে না। আমাদের ভরসা বৃষ্টি আর পুকুরের পানি। প্রচণ্ড ক্ষরায় পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানির ট্যাংকগুলো ফাঁকা। বাধ্য হয়ে রান্নার কাজে খালের পানি ব্যবহার করতে হয়। ফলে রোগ পিছু ছাড়ে না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম মেহেদী হাসান বলেন, এই এলাকায় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। যে কারণে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। প্ল্যান্ট থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৭০০ লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যায়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভেতরে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
শরণখোলার বান্ধাকাটা এলাকার গৃহবধূ কুনু বেগম বলেন, আমরা এখন ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পানি সংগ্রহ করি। একবার পানি নিয়ে ঘরে সংরক্ষণ করতে হয়। এতে পরবর্তী ২ দিন চলে যায়। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, শরণখোলায় অগভীর নলকূপে লবণ পানি ওঠে, আর গভীর নলকূপ বসানো যায় না। এখানকার প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ পানির জন্য পুকুর ও বৃষ্টির পানির ওপর ভরসা করে। এবার কোথাও পানি নেই, বৃষ্টিও নেই। মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে বর্তমানে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু সবার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। ফলে ভোগান্তি থেকেই যাচ্ছে। তারপরও জনগণ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।
জয়ন্ত মল্লিক আরও বলেন, আমরা তীব্র পানি সংকটের কথা শুনে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করি। তারপর ওই এলাকাগুলোতে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
Comments