ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠছে মধ্যরাতে, এখনই নদীতে নামতে চাইছেন না জেলেরা
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ জেলেরা আবার নদী-সাগরে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজ শনিবার মধ্যরাতে এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা হওয়ায় এবার কাঙ্ক্ষিত টার্গেট ৬ লাখ টন ইলিশ মাছ আহরণ সম্ভব হবে।
তবে নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে এই সময়ে মাছের আকাল থাকায় এবং ঈদের কারণে অনেক জেলেই জাল নিয়ে নদীতে যেতে আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছেন।
ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার কাজিরহাট এলাকার মেঘনা নদীর পাড়ে নৌকায় আলকাতরা দিচ্ছিলেন কালু মাঝি। তিনি জানান, 'এখন নদীতে মাছ নেই। আর ঈদের কারণে ছেলে-মেয়েদের সাথেই ঈদের আনন্দ করব। এই সপ্তাহে আর নদীতে যাব না।'
নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও এখনই নদীতে মাছ ধরতে নামা হচ্ছে না বলে জানান আরেক জেলে রতন সরদারও।
ভোলা সদরের, আলাউদ্দিন মাঝি জানান নদীতে মাছ না থাকলে তাদের প্রতি ট্রিপে লোকসান হয়। এক একটি ট্রিপে তাদের এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়, কিন্ত কাঙ্ক্ষিত মাছ না মিললে লোকসান গুনতে হয়। এর ফলে এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও নদীতে নামবে খুব কম সংখ্যক জেলে।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস জানান, রোববার ভোর থেকে ইলিশ আহরণ শুরু হবে, এবার কম সংখ্যক জেলেরাই নদীতে নামবে। ঈদের জন্য অনেকেই এই মুহূর্তে নদীতে নামবে না, তাছাড়া নদীতে মাছের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।
বিভাগীয় মৎস্য অফিস অবশ্য বলছে জেলেরা এই মুহূর্তে নদীতে নামতে না চাইলেও দ্রুতই নদীতে নামবে।
এদিকে অনেক জেলে অভিযোগ করেছেন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারের চাল সহায়তার চাল তারা একবারে শেষের দিকে পেয়েছেন।
তাদের অভিযোগ, 'আমরা এবার একেবারে শেষের দিকে চাল সহায়তা পেয়েছি, আমরা চাই নিষেধাজ্ঞার শুরুতেই যেন এটা দেওয়া হয়।'
বিভাগীয় মৎস অফিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান তালুকদার জানান, এবার দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার সময়ে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে, ১০ হাজার জেলেকে জাল ও ৫০০ জেলেকে বকনা বাছুর দেওয়া হয়েছে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অফিসের মতে, বরিশাল বিভাগে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৭২৪ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন, এর প্রায় আশি ভাগ জেলেই চাল পেয়েছে। তবে বিভাগে নিবন্ধনের বাইরেও রয়ে গেছে আরও অন্তত ২ লাখ জেলে। তাদের ক্রমান্বয়ে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।
Comments