শেষ বিকেলের ধসে ভীষণ বিপদে বাংলাদেশ
দক্ষিণ আফ্রিকা বড় রানে চড়ার পর এমনিতেই বাংলাদেশের উপর ছিল চাপ। সেই চাপে নেমে প্রথম ওভারে উইকেট হারালেও তামিম ইকবাল-নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে সামাল দিচ্ছিলেন পরিস্থিতি। তবে শেষ বিকেলে ৪০ রানের মধ্যে চার উইকেট তুলে বাংলাদেশকে চেপে ধরেছে প্রোটিয়ারা।
শনিবার পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচে স্পষ্ট দাপট স্বাগতিকদের। ৪৫৩ রানের জবাব দিতে নেমে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান তুলে দিন শেষ করেছে মুমিনুল হকের দল। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম অপরাজিত আছেন ৩০ রানে, সঙ্গী ইয়াসির আলির রান ৮।
বাংলাদেশের ৫ উইকেটের সবগুলোই নিয়েছেন পেসাররা। ১৭ রানে ২ উইকেট নেন ডোয়াইন অলিভিয়ার, ১৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বিপদ বাড়ান ভিয়ান মুল্ডার।
শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই মাহমুদুল হাসান জয়কে হারায় বাংলাদেশ। অলিভিয়ারের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে কোন রান না করেই ফেরেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান।
দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে জমে যায় শান্তর জুটি। প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে দু'একটি বল ছাড়া সাবলীলই ছিলেন তামিম। বেশ আগ্রাসী মেজাজে রান আনতে থাকেন তিনি।
সময় নিয়ে থিতু হয়ে শান্তও ধরেন একই তরিকা। দ্বিতীয় উইকেটে প্রায় ওয়ানডে গতিতে বেড়েছে রান। তামিম এগুচ্ছিলেন ফিফটির দিকে।
তৃতীয় পেসার মুল্ডার বল হাতে নিয়েই ফেরান তাকে। অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে অ্যাঙ্গেল তৈরি করে বল ভেতরে ঢুকাচ্ছিলেন মুল্ডার। তার তেমন এক বলে পরাস্ত হয়ে পা লাগিয়ে বিদায় নেন তামিম। নিজের আউট বুঝতে পেরে রিভিউ নেননি তিনি। ৫৭ বলে ৪৭ করা তামিমের বিদায়ে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৯ রানের জুটি।
মুল্ডার তার পরের ওভারে একই কৌশলে আরেক থিতু ব্যাটার শান্তকেও ফেরান। তবে শান্তর এলবিডব্লিউর আবেদন আম্পায়ার নাকচ করে দিয়েছিলেন। রিভিউ নিয়ে সফল হয় প্রোটিয়ারা। ৭৪ বলে ৩৩ করে থামেন শান্ত। ৩ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
ক্রিজে এসে ১ রানেই ফিরতে পারতেন অধিনায়ক মুমিনুল। কেশব মহারাজের স্পিনে স্লিপে ক্যাচ দিলেও তা হাতে জমাতে পারেননি কিগান পিটারসেন।
তবে জীবন পেয়েও তা কাজে লাগল না বাংলাদেশ অধিনায়কের। মুল্ডারের আরেকটি ভেতরে ঢোকা বল থামাল তার লড়াই। ১ রানে জীবন পেয়ে ২৪ বল খেলে মুমিনুল করতে পারেন স্রেফ ৬ রান।
ছন্দে থাকা লিটন দাস দেখার মতো দুই চারে শুরুটা পেয়েছিলেন ভালো। কিন্তু ঠিকমতো থিতু হওয়ার আগেই বিদায় তার। অলিভিয়ারের হালকা স্যুয়িং করে ভেতরে ঢোকা বল বুঝতে পারলেন না। ব্যাট-প্যাডে গ্যাপ থাকল। মিডল স্টাম্প ভেঙে গেল তার। লিটন ফেরেন ১৪ বলে ১১ করে।
দেখেশুনে থিতু হওয়া মুশফিক পরে ইয়াসিরকে নিয়ে পার করেন দিনের বাকিটা সময়। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে তারা এনেছেন ১৭ রান। তৃতীয় দিনে এই জুটির উপর থাকবে বড় দায়িত্ব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(দ্বিতীয় দিন শেষে)
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ১৩৬.২ ওভারে ৪৫৩ (এলগার ৭০, এরউইয়া ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরেইনা ২২, মুল্ডার ৩৩, মহারাজ ৮৪, হার্মার ১৯, উইলিয়ামস ১৩, অলিভিয়ের ০*; খালেদ ৩/১০০, মিরাজ ১/৮৫, ইবাদত ৩/১২১, তাইজুল ৬/১৩৫, শান্ত ০/৯)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪১ ওভারে ১৩৯/৫ (তামিম ৪৭, জয় ০, শান্ত ৩৩, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৩০*, লিটন ১১, ইয়াসির ৮*; অলিভিয়ের ২/১৭, উইলিয়ামস ০/৩০, হার্মার ০/৩১, মহারাজ ০/৪২, মুল্ডার ৩/১৫)।
Comments