জয় ওদের ফিল্ডিং নিয়ে খেলেছে: সিডন্স

Mahmudul Hasan Joy
ছবি- টুইটার

সাড়ে সাত ঘণ্টার চোয়ালবদ্ধ নিবেদন, নিজের উইকেটের মূল্য বুঝে পরিস্থিতির দাবি মেটানো। সুযোগ পেলেই ডানা মেলে রান বাড়ানো। মাহমুদুল হাসান জয়ের পুরো ইনিংস জুড়েই ছিল নিখুঁত পরিকল্পনার ছাপ। ধৈর্য, নিবেদন, অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রণ আর  দুর্দান্ত কিছু করার তাড়নায় এই তরুণ নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিতেই গড়েছেন ইতিহাস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে তার আগে যে বাংলাদেশের কেউই তিন অঙ্কে যেতে পারেননি। দিনের খেলা শেষে একুশ পেরুনো জয়ের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। তার মতে এই তরুণ প্রতিপক্ষের ফিল্ডিং নিয়ে ইচ্ছেমতও খেলেছেন।

শনিবার ডারবান টেস্টে বাংলাদেশকে ২৯৮ রানে আটকে ৬৯ রানের লিড নিতে পেরেছে প্রোটিয়ারা। ম্যাচে তাদের অবস্থানই ভালো। তবে দিনভর মুগ্ধতা ছড়ানো ব্যাটিংয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন জয়ই।

৪৪২ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩২৬ বল মোকাবেলা করেছেন। ১৫ চার, ২ ছক্কায় রান করেছেন ১৩৭। পরিস্থিতির দাবি যখন ছিল ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকা, তখন দেখিয়েছেন স্থিরতা। যখন দরকার ছিল দ্রুত রানের, দেখিয়েছেন স্ট্রোকের পসরাও।

সিডন্স জানালেন ভূমিকা বদলে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশে আসার পর যে অল্প কজন তার নজর কাড়েন, তার মধ্যে অন্যতম ডানহাতি জয়। জয়ের এই ইনিংসকেও তাই তিনি অনেক উপরেই রেট করলেন, 'আমি এখানে দুমাস হয় আছি। ওয়ার্ক ইথিকস, ব্যাট করার সময় প্যাশন, নিজের খেলা নিয়ে নিবেদনের দিক থেকে সে আমার নজরে পড়া একজন। আমার মনে হয় এটা তার দ্বিতীয় টেস্ট (আসলে তৃতীয়)। খুব বেশি কেউ তাকে জানে না, যদি না বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট দেখে থাকে। আজকের ইনিংসটি ছিল ধৈর্য, দুর্দান্ত পরিকল্পনার ফল । সে অহেতুক কোন শট খেলেনি। পুরো ইনিংস যেভাবে সাজিয়েছে তাতে আমি গর্বিত। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য স্পেশাল। এরচেয়ে ভালো টেস্ট ইনিংস বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের খুব বেশি আছে কিনা আমি নিশ্চিত নই।'

সাধারণত সাদা পোশাকের টেম্পারমেন্টের ঘাটতি নিয়ে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের যত বদমান। বিশেষ করে বয়স কম হলে তাদের অস্থির হতে দেখা যায় আরও বেশি। কিন্তু জয়ের মাঝে ভিন্ন এক ছবি দেখেছেন সিডন্স, ভীষণ পরিণত জয় তাকে করেছেন মুগ্ধ, 'ম্যাচের পরিস্থিতি হয়তো তাঁর পক্ষে ছিল। বিশেষ করে ইনিংসের শুরুতে। স্পিনাররা ইনিংসের শুরুতে অনেক বেশি বল করেছে যখন আলো কম ছিল। তবে তাঁর ধৈর্যটা আমার চোখে পড়েছে। আমাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এই ধৈর্যটা তেমন দেখা যায় না। সবসময়ই আলগা ব্যাটিং দেখা যায়। এই টেস্টে অবশ্য কেউই বাজে শট খেলে আউট হয়নি। খুবই ভালো বোলিং ও একটা বাজে রান আউট ছিল আমাদের ইনিংসে।  খুব ভালো ধৈর্য নিয়ে খেলেছে।'

'কিন্তু জয় ওদের ফিল্ডিং নিয়ে খেলেছে। সে ওভার দ্য টপে খেলেছে। যখন দক্ষিণ আফ্রিকা ফিল্ডার পেছনে নিয়েছে, তখন সে বল ঠেলে এক রান নিয়েছে। ফিল্ডিং নিয়ে খেলা, ধৈর্য নিয়ে বাজে বলের অপেক্ষা করা এবং নিজের ওপর ছয় ঘণ্টা ব্যাটিং করার বিশ্বাস রাখা – এটাই সব তরুণদের বলছি। আমরা এখন ওদের কাছ থেকে আরও বড় বড় ইনিংস প্রত্যাশা করতে পারি।'

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

1h ago