দাওয়াত না পেয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

সোহাগ ব্যাপারী। ছবি: সংগৃহীত

খাবারের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় কলেজ শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারীর বিরুদ্ধে।

বুধবার রাতে ওই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ ওয়ারেছুল আজম মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, 'বুধবার বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা চলছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রের পরিদর্শক হিসেবে অন্য কলেজের কয়েকজন শিক্ষক সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া আমাদের সাবেক বিভাগীয় প্রধান উপস্থিত ছিলেন। তাই এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও খাবার-দাবারের আয়োজন ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী তাদের কর্মীদের নিয়ে ৩০২ নম্বর রুমে এসে আমাকে বলে, স্যার আমাদের খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিলেন না। তখন শিক্ষক সোহেল কয়েকবার আমার রুমে আসেন। তারা সোহেলকে বলে, আপনি বারবার এখানে এসে আমাদের কাজের ডিস্টার্ব করছেন কেন। এরপর তারা সোহেলের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করলে সোহেলের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।'

'তাদের বলি আমার সহকর্মীর সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করতে পারো না। একটা সময় তারা উত্তেজিত হয়ে সোহেলকে মারধর করে। পরে সোহেলকে তাদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাই'-বলেন তিনি। 

এ বিষয়ে প্রভাষক বি এম সোহেল রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী ২০-২৫ জন কর্মী নিয়ে বাংলা বিভাগে আসে। আমাদের বলে, খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানে তাদেরকে কেন দাওয়াত দেইনি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সোহাগ আমার বিভাগীয় প্রধান মো. ওয়ারেসুল আজমের সামনে আমাকে লাথি ও কিল ঘুষি মারে। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমাকে মারতে আসলে ওয়ারেসুল আজম স্যার তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেন।'

তিনি আরও বলেন, 'রাতে আমাদের বোর্ড মিটিং হয়েছে এবং রাত ১১টার দিকে সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা এ বিষয়ে পালং মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করব।'

সোহাগ ব্যাপারী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার মতো কোনো ঘটনা কলেজে ঘটেনি। এটা ভিত্তিহীন সংবাদ। শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার দুঃসাহস আমরা করতে পারি না। আমরা আগে ছাত্র, পরে ছাত্রলীগ।'

তিনি আরও বলেন, 'আজকে বাংলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের ভাইভা চলছিল। সেখানে শিক্ষকরা তাদের খাবার-দাবার এবং প্রোগ্রামের জন্য ৫০০ টাকা করে চাঁদা তুলেছিলেন। আমি আমার ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ও কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে বাংলা বিভাগে গিয়েছিলাম শিক্ষকদের অনুরোধ করতে। আমাদের দাবি ছিল, ৫০০ টাকার পরিবর্তে যেন ২০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। কারণ ৫০০ টাকা হয়তো অনেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। শিক্ষকরা আমাদের আশ্বাস দেন, আমাদের কথা তিনি ভেবে দেখবেন বলেন। এরপর আমরা চলে আসি।'

জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মহসিন মাদবর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনো কর্মীর কুকর্মের দায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনোই নেবে না। আমি কয়েকজনের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। যদি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অবশ্যই তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেবে। কারণ কোনো অযাচিত লোকের স্থান বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই।'
 

Comments

The Daily Star  | English
Reform commission reports' submission

We never got a chance to reform our state and politics like now. Let’s not waste it

Our initial study of the reports of the four commissions indicates that the recommendations are quite substantive.

12h ago