মা হারানো হনুমান শাবকটিও চলে গেল
মায়ের মৃত্যুতে চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে থাকা চশমাপড়া হনুমান শাবকটি মারা গেছে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান গতকাল মঙ্গলবার শাবকটির মৃত্যু হয়।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, উদ্যানের ভেতরে চলাচল করা যানবাহন, রেলপথ ও বৈদ্যুতিক লাইন বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি। বন্যপ্রাণী মৃত্যুর অন্যতম কারণ এগুলো। এই বিষয়ে যদি এখনই উদ্যোগ না নেওয়া হয় তাহলে বন্যপ্রাণী বিলুপ্তি হওয়ার আশংকা আছে।
এর আগে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া রেস্ট হাউজের কাছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চশমাপরা হনুমানটি মারা যায়। সেসময় হনুমানটির সঙ্গে মাত্র ৩ দিনের একটি শাবক ছিল। শাবকটির সামনেই মা হনুমান মারা যায়।
লাউয়াছড়া রেঞ্জে কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, 'এ সময় শাবকটি চিৎকার করে কাঁদছিল। শাবকটির কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিল না কেউ।'
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণী রেসকিউ সেন্টারের চলমান ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি মুখপুড়া হনুমানের মৃত্যু হয়। একই দিনে সন্ধ্যায় রাস্তা পারাপারের সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় একটি উল্টো লেজি বানর মারা যায়।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, 'আপ্রাণ চেষ্টা করেও শাবকটিকে বাঁচাতে পারলাম না। এমনকি চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগও আমরা পাইনি।'
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'এটা হৃদয়বিদারক। উদ্যানের ভেতরে চলা যানবাহন, রেলপথ ও বৈদ্যুতিক লাইন বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বার বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী রক্ষায় বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বনে আর কোনো প্রাণী খুঁজে পাওয়া যাবে না।'
ক্ষোভ প্রকাশ করে লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল হক বলেন, 'আর কত প্রাণী মরলে এই পথগুলো বন্ধ হবে তা কারো জানা নেই।'
Comments