মা হারানো হনুমান শাবকটির চোখে অনবরত অশ্রু ঝরছে
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া রেস্ট হাউসের কাছে বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে একটি চশমাপরা হনুমান মারা গেছে। এসময় হনুমানটির সঙ্গে ছিল ৩ দিনের একটি শাবক। শাবকের সামনেই মা হনুমানের মৃত্যু হয়।
লাউয়াছড়া রেঞ্জে কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, মায়ের মৃত্যুতে শাবকটির চোখ দিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে অশ্রু ঝরছে। এ দৃশ্য দেখে স্থানীয়রাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।
তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৬টার দিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণী রেসকিউ সেন্টারের চলমান ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি মুখপোড়া হনুমান মরে রাস্তায় পড়ে থাকে। এসময় তার সঙ্গে ছিল ৩ দিনের শাবক। এছাড়া, রাস্তা পারের একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় একটি উল্টো লেজি বানর মারা যায়।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃহস্পতিবার সকালে বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সড়ক পারাপারে যানবাহনের নিচে কাটা পড়ে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুরোধে যানবাহনের গতি সীমা ২০ কিলোমিটারে সীমিত রাখতে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়। অথচ সেদিন বিকেলে দুটি বন্যপ্রাণী মারা যায়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রাণী দুটিকে বাঁচাতে পারিনি। এমনকি চিকিৎসা দেওয়ারও সুযোগ পাইনি। রেসকিউ সেন্টারে থাকা বন্যপ্রাণীটির বয়স হবে তিনদিন। বাচ্চাটি বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু, ওর চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে।'
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলা যানবাহন, রেলপথ ও বৈদ্যুতিক লাইন বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বার বার জানানো হয়েছে। তারা বন্যপ্রাণী রক্ষায় বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছেন। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বনে আর কোনো প্রাণী খুঁজে পাওয়া যাবে না।'
Comments