গণমাধ্যমের কথা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ না: ডমিঙ্গো
দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক অনুশীলনে এলেন বাংলাদেশের স্কোয়াডের সাত ক্রিকেটার। ফুরফুরে মেজাজে চলল তাদের ঘাম ঝরানো। সেটা হবে না-ই বা কেন! আগের দিনই আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্মরণীয় জয় পেয়েছে তারা। একেবারে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে।
অনুশীলনে মুশফিক বরাবরই ভীষণ সিরিয়াস। সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোস্তাফিজুর রহমান থেকে শুরু করে প্রথম ম্যাচে জয়ের দুই নায়ক আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজরা বিশ্রাম বেছে নিলেও তিনি হাজির চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন শিষ্যদের। দুপুর ১২টার দিকে তাকে দেখা গেল মুশফিকের কাছাকাছি। নেটে তিনি কিছুক্ষণ থ্রো ডাউন করলেন বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটিং ভরসাকে।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকান ডমিঙ্গো আসেন সংবাদ সম্মেলনে। মাঠের উত্তর দিকে সেসময় তার পাশে ছিলেন লজিস্টিক ম্যানেজার নাফিস ইকবাল। তিনিই নির্ধারণ করে দিচ্ছিলেন গ্যালারিতে অবস্থান নেওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের কারা পাবেন প্রধান কোচকে প্রশ্ন করার সুযোগ। এক পর্যায়ে, ডমিঙ্গোর কাছে প্রশ্ন গেল, 'প্রবল সমালোচনার মাঝে দায়িত্বের মেয়াদ পূর্ণ করার ব্যাপারে তিনি কি আত্মবিশ্বাসী?'
অবিশ্বাস্য জয়ে সিরিজে এগিয়ে থাকার কারণেই হয়তো ডমিঙ্গো ছিলেন নির্ভার। এমন প্রশ্ন শুনেও ভড়কে যাননি। বরং হাসি হাসি মুখে ঠাণ্ডা মাথায় দিয়ে গেলেন লম্বা জবাব। গত বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ক্রিকেট নিয়ে প্রকাশিত নেতিবাচক খবরে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেটা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে। আবারও গণমাধ্যমের বিপরীতে সরব হলেন তিনি।
প্রশ্নকর্তার উদ্দেশ্যে ডমিঙ্গো বললেন, 'এটা আপনার বিসিবিকে জিজ্ঞেস করতে হবে। আমি যদি আত্মবিশ্বাসী না হতাম, তাহলে আমি একটি জাতীয় দলকে কোচিং করাতে পারতাম না। গণমাধ্যম যা-ই বলুক, লোকেরা যা-ই বলুক... আমি রূঢ়ভাবে এটা বলছি না... সেসব কথা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ না।'
বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের মতে, তিনি নিজে যদি গণমাধ্যমের খবরে চাপ বোধ করেন, তাহলে ক্রিকেটারদের ওপর পড়বে নেতিবাচক প্রভাব। তাই সেসব কথা গায়ে লাগান না তিনি, 'আপনাদের কাজ হলো লেখালেখি করা। আমার ব্যাপারে, খেলোয়াড়দের ব্যাপারে আপনারা যা ইচ্ছা তা লিখতে পারেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমি বাইরের কথাবার্তাগুলো খেলোয়াড়দের থেকে দূরে রাখি। যদি আমি বাইরের কথাবার্তা দ্বারা প্রভাবিত হই, তাহলে আমি এটা প্রত্যাশা করতে পারি না যে আমার খেলোয়াড়রা সেসব কথাবার্তায় প্রভাবিত হবে না।'
ডমিঙ্গো আরও জানালেন, ক্রিকেট নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বেশির ভাগ সময় তিনি বুঝতেই পারেন না, 'আপনারা যা চান, তা-ই লিখতে পারেন। আমি আবারও বলছি, আমি রূঢ়ভাবে এটা বলছি না। আমি সততার সঙ্গে বলছি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনারা যা লেখেন, তা আমি বুঝতে পারি না। তাই সেসব আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ না।'
সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ডমিঙ্গোর সঙ্গে দুই বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করে বিসিবি। তবে তার চুক্তি বাড়ানো নিয়ে জল ঘোলা কম হয়নি। এমনকি চুক্তি নবায়নের কয়েক মাসের মধ্যেই তার বিকল্প খোঁজার ব্যাপারে নানা কথাবার্তা শোনা গেছে বোর্ডের কর্মকর্তাদের মুখ থেকে। তাছাড়া, টিম ডিরেক্টর হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজন ও ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে জেমি সিডন্সের নিয়োগ ডমিঙ্গোর দায়িত্ব ও কাজের পরিধি নিয়ে তৈরি করেছে অনেক প্রশ্ন।
Comments