শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রতি আস্থা রেখে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
ছবি: শেখ নাসির/স্টার

শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রতি আস্থা রেখে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

আজ শনিবার রাত ৮টার দিকে শাবিপ্রবিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ।

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে গতকালের (শুক্রবার) বৈঠক নিয়ে এক সাধারণ সভা আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, 'গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের আমন্ত্রণে শাবিপ্রবিতে এসেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আমাদের দাবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে এবং তিনি আন্তরিকতার সাথে শুনেছেন। আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের প্রথম দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে মন্ত্রী আচার্যের সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আচার্যের কাছে উপস্থাপনের আশ্বাস দেন। আমরা আশা করবো শিক্ষার মান ও পরিবেশ নিশ্চিতে আচার্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের কথা বিবেচনায় রাখবেন।'

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দুটি প্রত্যাহারের ব্যবস্থা, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের বন্ধ করে দেয়া মোবাইল সিম ও মোবাইল ব্যাংকিং ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সচল এবং পুলিশের গুলি-গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে গুরুতর আহত সজল কুন্ডুর উন্নত চিকিৎসার পাশাপাশি তার চাকরির ব্যবস্থারও আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রী দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মুখপাত্র বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের সকল দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়ায় তাদের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আমাদের আন্দোলন আপাতত প্রত্যাহার করে নিলাম এবং দাবি পূরণের অপেক্ষায় থাকলাম।'

আগামীকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ এবং ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বানও জানান তিনি।

এসময় দেশ-বিদেশের সাধারণ মানুষ যারা আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন, রাস্তায় নেমে সংহতি জানিয়েছেন এবং হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

গত ১৩ জানুয়ারি বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। পরে এ আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।

এরপর ১৬ জানুয়ারি দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে এবং রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। সেদিন অন্তত ৩০জন শিক্ষার্থী আহত হয়।

সেই রাতেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে ১৯ জানুয়ারি বিকেল ২টা ৫০ মিনিট থেকে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।

পরবর্তীতে এর মধ্যে ১জন শিক্ষার্থীর বাবার অসুস্থতার কারণে অনশন ত্যাগ করেন এবং আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন।

গত বুধবার ভোররাতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশ্বাস নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দম্পতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমীন হক।

শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেবে সরকার, এমন আশ্বাসে গত বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Former planning minister MA Mannan arrested in Sunamganj

Police arrested former Planning Minister MA Mannan from his home in Sunamganj's Shatiganj upazila yesterday evening

3h ago