নাসুমের দুর্দান্ত বোলিং, তামিমের মন্থর ফিফটির পর হারল ঢাকা

Nasum Ahmed
উইকেট নেওয়া নাসুম আহমেদকে নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের উল্লাস। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

উইল জ্যাকস-সাব্বির রহমানদের গড়ে দেওয়া মঞ্চে শেষের ঝড় তুললেন বেনি হাওয়েল। চট্টগ্রাম পেল চ্যালেঞ্জিং পুঁজি। ওই রান নিয়ে দারুণ বোলিংয়ে মিনিস্টার ঢাকাকে চেপে ধরেন নাসুম আহমেদ। তামিম ইকবাল দ্বিতীয় ফিফটি করলেও তা ছিল বেশ মন্থর, মিটল না দলের চাহিদা। চাপে পুষাতে পারলেন না বাকিরাও।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মিনিস্টার ঢাকাকে টানা দ্বিতীয় হারের স্বাদ দিয়ে ৩০ রানে জিতেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। চট্টগ্রামের ১৬১ রানের জবাবে ঢাকা থামে ১৩১  রানে।

চট্টগ্রামের জয়ে অবদান কয়েকজনের। তবে সবাইকে ছাপিয়ে যান বাঁহাতি স্পিনার নাসুম। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

১৬২ রান তাড়ায় নেমে ঢাকার শুরুটা হয় মন্থর। নাসুম আহমেদ-মেহেদী হাসান মিরাজ শুরুতে চেপে রাখেন তামিম ও মোহাম্মদ শেহজাদকে। প্রথম ৪ ওভারে আসে কেবল ১৮ রান। প্রথম ১৫ বলে তামিম করেন মাত্র ৩ রান।

এরপরই তামিম মেলে ধরেন ডানা। মিরাজকে ছক্কায় উড়ানোর পর শরিফুল ইসলামের ওভারে মারেন দুই চার, এক ছয়। ডট বলের চাপ তখন অনেকটাই কমে আসে। মিরাজকে পরের ওভারে পেয়ে আরও দুই চার মারেন তামিম। এরপর আবার কুঁকড়ে যান তিনি।

আগের ম্যাচে ঝড় তুলা শেহজাদ এদিন পারেননি। নিজের উপর চাপ বাড়িয়ে ফেরেন ৯ রান করে। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধের বলে ধরা দেন থার্ড ম্যানে। ৪২ রানে প্রথম উইকেট হারায় ঢাকা।

আরেকটি পঞ্চাশের দিকে ছুটে যাওয়া তামিম জীবন পান ৪৬ রানে। হাওয়েলের বলে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন কিপার কেনার লুইস। সুযোগ পেয়ে ৪২ টানা দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। তবে এরপর আর বড় হয়নি ইনিংস। শরিফুল দ্বিতীয় স্পেলে এসে বোল্ড করে ফেরান তামিমকে। ৪৫ বলে থামে তামিমের ৫২ রানের ইনিংস। অনেক বেশি ডট বল খেলায় ফিফটি করলেও তামিমের ইনিংসে বেড়ে যায় দলের চাপ।

তিনে নেমে জহুরুল ইসলাম করেন ১২ বলে ১০ রান। নাঈম শেখকে চারে নেমে করেন ৬ বলে ৪ রান। ওভারপ্রতি ১৪ রান করে নেওয়ার চাহিদায় নেমে আন্দ্রে রাসেলও পারেননি। ১ ছয়, ১ চারে ১০ বলে ১২  করে নাসুমের শিকার হন তিনি। 

ওপেনিং জুটি এদিনও একদম জমেনি চট্টগ্রামের। আগের দিন ছক্কার পর অক্কা যাওয়া কেনার লুইস এবার ২ রান করেন থামান দৌড়। রুবেলের বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাট নিতে না পেরে কাটা পড়েন এলবিডব্লিউতে।

আরেক ওপেনার জ্যাকসকে পাওয়া যায় আগ্রাসী মেজাজে। চার-ছয়ে শুরুর ঝড় তুলেন তিনিই। তিনে নেমেই আফিফ হোসেন ক্যাচ দিয়েছিলেন, ইবাদত হোসেনের বলে সহজ সে ক্যাচ জমাতে পারেননি তামিম। নড়বড়ে আফিফকে এক পাশে রেখেই ৪৮ রান যোগ করেন জ্যাকস। জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে না পারা আফিফের বিদায় হয় ১২ রান করে। আরাফাত সানির বলে বেরিয়ে এসে উড়ায়ে গিয়ে ফেরেন তিনি।

বিপদজনক জ্যাকসকে এর খানিক পরই ফেরান শুভাগত হোম। পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান তুলার পর দ্রুত পথ হারায় চট্টগ্রাম। এরপর সাব্বির রহমানের সঙ্গে জুটি গড়েন মিরাজ। সাব্বির দ্রুত রান আনতে পারলেও মিরাজ ছিলেন মন্থর।

জুটিতে ৪৪ রান আনতে লেগে যায় ৫৫ বল। ওই সময়টাতেই খেলায় ফেরে মিনিস্টার ঢাকা। ২৫ করে মিরাজ ফেরার পর রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন সাব্বির। থিতু হওয়া এই ব্যাটসম্যানকেও বোল্ড করেন রুবেল।

চট্টগ্রামের বাকি পথের নায়ক বেনি হাওয়েল। শামীম হোসেন, নাঈম ইসলামদের রান না পাওয়ার মাঝে একা হাতে দলকে টেনেছেন তিনি। দলকে নিয়ে যান ১৬০ ছাড়িয়ে। ওই রানই পরে হয়ে যায় যথেষ্ট। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ৫০ ওভারে ১৬১/৮ (লুইস ২, জ্যাকস ৪১, আফিফ ১২, সাব্বির  ২৯ , মিরাজ ২৫, হাওয়েল ৩৭ , শামীম ১, নাঈম ০, নাসুম ৮*  ; রুবেল ৩/২৬, সানি ১/২৩,  ইশুরু ১/৩৯ , ইবাদত ০/২৬ , রাসেল ০/১৭, শুভাগত ১/১৫)

মিনিস্টার ঢাকা: ১৯.৫ ওভারে ১৩১  ( তামিম ৫২, শেহজাদ ৯, জহুরুল ১০, নাঈম , মাহমুদউল্লাহ ৫, রাসেল ১২, শুভাগত ১২, উদানা ১৬,  সানি ০, ইবাদত , রুবেল ; নাসুম ৩/৯ , মিরাজ ০/৩১,  শরিফুল ৪/৩৪ , মুকিদুল ১/২২ , হাওয়েল ০/২৭ )

ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৩০ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Interim govt an outcome of country's unity: Yunus

CA urges political parties to extend support at all-party meeting on July uprising proclamation

2h ago