'গত সপ্তাহের গোছানো বোলিং এবার করতে পারিনি'
সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইবাদত হোসেন। তার সঙ্গে জ্বলে উঠেছিলেন দলের বাকি বোলাররাও। স্কিল, কারুকাজ ও ধারাবাহিকতার নতুন নজির গড়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের করে ফেলেছিলেন কোণঠাসা। তাতে কিউই দুর্গ ভেঙে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে অসাধারণ এক জয় মিলেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু পরের ম্যাচেই সেই পুরনো চিত্র। এবার বোলারদের ব্যর্থতায় দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই ব্যাকফুটে বাংলাদেশ।
ক্রাইস্টচার্চে রোববার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ১ উইকেটে ৩৪৯ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। টাইগারদের একমাত্র সাফল্যটি পেসার শরিফুল ইসলামের। এদিন কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পেরেছেন এ তরুণই। প্রথম টেস্টের জয়ের নায়ক ইবাদত তো এদিন ছিলেন বিবর্ণ। শুরুতে কিছুটা আগ্রাসী থাকলেও ধীরে ধীরে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারান। সতীর্থরাও হাঁটেন একই পথে।
ম্যাচ শেষে ধারাবাহিকতা ধরে না রাখার আক্ষেপ ঝরে বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ গিবসনের কণ্ঠে, 'ওরা অবশ্যই খুব ভালো খেলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, গত সপ্তাহে আমরা গোছানো বোলিংয়ের যে নজির দেখিয়েছিলাম, এবার তা পারিনি। ল্যাথাম খুব ভালো খেলেছে। সকালে আমাদের অনেক ভালো বল সে ছেড়েছে এবং আমাদেরকে বাধ্য করেছে তার শরীরে বল করতে। আর যেটা বললাম, গত সপ্তাহে যে চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছিলাম, এবার তা করার মতো যথেষ্ট ভালো বল আমরা করতে পারিনি। আর কনওয়ে অবিশ্বাস্য ফর্মে আছে, তাই না? সে গিয়ে সবকিছুই সহজ করে তুলেছে।'
আর এটা বোলারদের জন্যও বড় শিক্ষার ব্যাপার বলে মনে করেন এ সাবেক ক্যারিবিয়ান পেসার, 'আজকের দিনটি তাদের জন্য শিক্ষার… আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কঠিন ব্যাপার। প্রতিটি পরিস্থিতির জন্য এখানে প্রস্তুত থাকতে হয়। দুভার্গ্যজনকভাবে, গত সপ্তাহের শৃঙ্খলা আমরা আজকে দেখাতে পারিনি। মানসিকতা আজকে ভালো ছিল। স্রেফ যতটা গোছানো দরকার ছিল, ততটা ছিলাম না আমরা। যেটা বলেছিলাম, আমাদের ধারণা ছিল উইকেটে সহায়তা যতটা মিলেছে, তার চেয়ে বেশি থাকবে। যখন আমরা ফুল লেংথে বল করেছি, খুব বেশি সিম মুভমেন্ট ছিল না। নিউজিল্যান্ডের বোলাররা তা কাজে লাগিয়েছে।'
অথচ কন্ডিশন ও উইকেট দেখে মনে হয়েছিল আরও একটি নতুন গল্প লিপিবদ্ধ হতে যাচ্ছে ইবাদতদের তালিকায়। সবুজ উইকেট। তার সঙ্গে মেঘলা আকাশ। আর কি চাই পেসারদের। সেখানে এলোমেলো বোলিংয়ে দিনের খরুচে বোলারটার নাম ইবাদত। রীতিমতো রানের ফোয়ারা ছোটালেন কিউইরা। অবশ্য তার প্রথম ওভারে দুইবার অঙ্গুল উঠেছিল আম্পায়ারের। তবে রিভিউতে দুইবারই বদলে যায় সিদ্ধান্ত। পরে অবশ্য ক্যাচও তুলেছিলেন এ পেসার। দ্বিতীয় স্লিপ থেকে প্রথম স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ লুফে নিতে গিয়ে ফেলে দেন লিটন দাস।
তবে উইকেট থেকে পর্যাপ্ত সুবিধা পাননি বলেই দাবি করেন গিবসন। যদিও এটাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করেননি এ ক্যারিবিয়ান, 'আমার মনে হয়, উইকেটের সবুজ দেখলে যেমনটি মনে হয়, বল ততটা করেনি আজকে। যতটা প্রত্যাশা ছিল, ততটা করেছে বলে মনে হয় না আমাদের। তবে এটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চাই না। যতটা ভালো বোলিং করা উচিত ছিল, ততটা ভালোও আমরা করতে পারিনি।'
তবে এটাকে একটি খারাপ দিন মেনে খুব শীগগিরই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় প্রকাশ করেন গিবসন, 'এটা স্রেফ আরেকটা দিন। এটার নিশ্চয়তা নেই যে প্রতিটি দিনই ভালো যাবে। আমাদের তাই তরতাজা হয়ে কালকে ভালো দিনের চেষ্টা করতে হবে।'
Comments