সাদামাটা থেকে যেভাবে এমন দুর্ধর্ষ ইবাদত 

Ebadat Hossain

ইবাদত হোসেন কেন বাংলাদেশ টেস্ট দলে, এই প্রশ্নই প্রায় তুলতেন ভক্ত, সমর্থকরা। এই টেস্টের আগে ১০ টেস্টে উইকেট যে ছিল তার কেবল ১১টি, গড়-স্ট্রাইকরেটে ছিল হতশ্রী দশা। সেই ইবাদত হয়ে উঠলেন বিধ্বংসী। বনে গেলেন নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জনের নায়ক। কীভাবে অমন পাল্টে গেলেন? বাংলাদেশের এই ডানহাতি পেসার জানিয়েছেন, কোন আলাদিনের চেরাগ নয়,  গেল দুই বছর ধরে কোচ ওটিস গিবসনের সঙ্গে ক্রমাগত কাজের ফলেই এসেছে এই অভাবনীয় সাফল্য।

বুধবার মাউন্ট মাঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্ট ধরে অজেয় কিউইদের হারানোর এই অবিশ্বাস্য ঘটনার মূল নায়ক ইবাদত। দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকদের ১৬৯ রানে আটকে দিতে ৪৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি।

ব্যাটিংয়ে মুমিনুল হক, লিটন দাস, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হাসান শান্তর আছে বড় অবদান। তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজরা বল হাতে রেখেছেন অবদান। তবে ম্যাচ ঘুরানো স্পেলে অনুমিতভাবেই ম্যাচ সেরা ইবাদত।

ম্যাচ শেষে ২৭ পেরুনো এই পেসার জানান খেলার আগেই জেতার পণ নিয়ে নেমেছিলেন তারা,  'প্রথমত সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। দ্বিতীয়ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আমাদের ভাইয়েরা গত ২১ বছর ধরে জেতেনি। আমরা এবার একটা লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম। আমরা হাত তুলে বলতে চেয়েছি নিউজিল্যান্ডকে নিউজিল্যান্ডের মাঠে হারাতে হবে। তারা টেস্ট চ্যাম্পিয়ন। আমাদের এই সাফল্য দেখে পরের প্রজন্ম নিউজিল্যান্ডকে হারাতে সাহস পাবে।'

ইবাদতকে ইনস্যুইং, আউটস্যুংয়ের পাশাপাশি রিভার্স স্যুইং করে সাফল্য পেতে দেখা গেছে। ছিল জুতসই গতি। এমন স্কিল আয়ত্তের পেছনে পেস বোলিং কোচ গিবসনকে কৃতিত্ব দিলেন তিনি,  'গত দুই বছর ধরে আমি ওটিস গিবসনের সঙ্গে কাজ করছি। দেশে কন্ডিশন খুব ফ্লাট থাকে। দেশের বাইরের কন্ডিশনে কীভাবে রিভার্স স্যুয়িং করতে হয় আমরা এসব শিখছি।'

ইবাদতের উন্নতি অবশ্য দেখা যায় পাকিস্তান সিরিজেই। চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে পেস বোলারদের জন্য বিরূপ কন্ডিশনেও ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখার কাজ করেছিলেন তিনি।  ঢাকায় পরের টেস্টে আবার পারফরম্যান্স নেমে আসে গড়পড়তায়। তবে ইবাদতের উপর ঠিকই আস্থা রাখে দল। নিউজিল্যান্ডে প্রথম ইনিংসেও শুরুতে ভাল করেননি। তিনি প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। পরের ইনিংসে একদম বদলে যান। ধারাবাহিকভাবে ভাল জায়গায় বল করতে থাকেন, বৈচিত্র্য যোগ হওয়ায় আসে একের পর এক সাফল্য। দ্য ডেইলি স্টারকে পেস বোলিং কোচ গিবসন জানান,  দলের আস্থা, নিজের পরিশ্রম আর সহজাত স্কিলের মিশেলে নিজেকে এমন উচ্চতায় তুলেছেন নাটকীয়ভাবে ক্রিকেটে আসা সাবেক এই ভলিবল খেলোয়াড়। 

ইবাদতের ক্রিকেটে আসার সেই গল্প সবারই জানা। সৈনিক হিসেবে ছিলেন নৌবাহিনীতে। সেখানে খেলতেন ভলিবল। নিজের এমন অর্জনের দিনেও তাই নৌবাহিনীকেও স্মরণ করেছেন তিনি, 'আমি নৌবাহিনীর একজন সৈনিক। সেখানে ভলিবল খেলতাম। ভলিবল থেকে ক্রিকেটে আসা লম্বা গল্প। আমি ক্রিকেট উপভোগ করছি। আমি বিমানবাহিনীকে প্রতিনিধিত্ব করছি, বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি।'

Comments

The Daily Star  | English

High inflation, costly loans force firms to cut spending

Some manufacturers say they are now opting to reduce office utility consumption, optimise office supplies, minimise bank dependence, and find alternative funding sources.

13h ago