টেইলরের স্টাম্প উড়িয়ে ইবাদতের ৫ উইকেট
সময়ের হিসেবে প্রায় ৯ বছর। ম্যাচের হিসেবে ৪৭ টেস্ট। সেই ২০১৩ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশের কোনো পেসার টেস্টে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। এরপর আর দেখা যায়নি তা। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে দুই টেস্টেই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন রবিউল ইসলাম। এরপর কাছাকাছি গেলেও আর কোনো পেসারের পাওয়া হয়নি তা। অবশেষে ইবাদত হোসেন ৫ উইকেট নিলেন এমন এক পরিস্থিতিতে, যা হতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে স্মরণীয় অধ্যায়।
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের চতুর্থ দিনই ৫ উইকেট নেওয়ার অনেক কাছে চলে গিয়েছিলেন ইবাদত। পেসের ঝাঁজে ৪ উইকেট নিয়ে ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের। বুধবার শেষ দিনে বাংলাদেশের জেতার আভাসের মাঝে প্রথম ওভারেই ইবাদত সরালেন সবচেয়ে বড় কাঁটা রস টেইলরকে।
দিনের দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই সাফল্য পান ইবাদত। দারুণ একটি ভেতরে ঢোকা বলে তিনি স্টাম্প উড়িয়ে দেন অভিজ্ঞ টেইলরের। তাতে ১৫৪ রানে পতন হয় নিউজিল্যান্ডের ষষ্ঠ উইকেটের। টেইলর ১০৪ বলে করেন ৪০ রান। আগের দিনের ১৭ রানের লিড বাড়িয়ে বোলারদের লড়াইয়ের পুঁজি দিতে তার দিকেই তাকিয়ে ছিল নিউজিল্যান্ড। তবে টেইলর পারেননি সেই দাবি পূরণ করতে। তার বিদায়ে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল রূপ নেয়।
পরের ওভারে আক্রমণে ফিরে ইবাদত শিকার করেন কাইল জেমিসনকে। মিডউইকেটে শরীর হাওয়ায় ভাসিয়ে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নেন শরিফুল ইসলাম। এতে দলীয় ১৬০ রানে সপ্তম উইকেট হারায় স্বাগতিক কিউইরা। ৮ বল খেলে রানের খাতা খুলতে না পারা জেমিসনকে বিদায় করে ইবাদত দেখা পান নিজের ষষ্ঠ উইকেটের। টেস্টে তার আগে ইনিংসে ৬ উইকেট পাওয়ার নজির আছে বাংলাদেশের মাত্র তিন বোলারের। তারা হলেন মঞ্জুরুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন ও রবিউল।
ইবাদতের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে কেবল ১৬৯ রানে। তারা পেয়েছে মাত্র ৩৯ রানের লিড। অর্থাৎ ঐতিহাসিক এক জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে মোটে ৪০ রান। চতুর্থ দিনের ৫ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। এদিন সকালে টাইগারদের বোলিং তোপে এক ঘণ্টাও টেকেনি তাদের ইনিংস। ১০.৪ ওভারে বাকি সব উইকেট হারিয়ে তারা যোগ করতে পারে মাত্র ২২ রান।
২১ ওভার বল করে ৬ উইকেট নিতে ইবাদতের খরচা ৪৬ রান। টেস্টে এটি বাংলাদেশের কোনো পেসারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। সেরা নৈপুণ্যের রেকর্ড শাহাদাতের দখলে। ২০০৮ সালে ঢাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৭ রানে ৬ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।
সকালে ইবাদতের পর জ্বলে ওঠেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। নিজের পরপর দুই ওভারে তিনি আউট করেন রাচিন রবীন্দ্র ও টিম সাউদিকে। রবীন্দ্রর ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ইনসাইড এজে সাউদি হন বোল্ড। এরপর ট্রেন্ট বোল্ট অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বলে পরাস্ত হলে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। ডিপ মিডউইকেটে সীমানার কাছে বদলি ফিল্ডার তাইজুল ইসলাম ধরেন নজরকাড়া একটি ক্যাচ।
Comments