করোনার টিকাদান কর্মসূচি সঠিক পথে

ছবি: সংগৃহীত

এখন পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি তথা ৭ কোটির বেশি মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ ও ৫ কোটিরও বেশি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার জন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

সরকার টিকা পাওয়ার জন্য উপযুক্ত সব ব্যক্তিকে এই বছরের জুনের মধ্যে ২ ডোজ ও বছরের শেষ নাগাদ বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

ইতোমধ্যে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার পাশাপাশি সীমিত আকারে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার।

এ ছাড়া, নিজস্ব টিকা উৎপাদনের জন্য এই বছরের মধ্যে একটি টিকা প্ল্যান্ট স্থাপনের যে পরিকল্পনা সরকার করেছে, সেটিকেও খুব আশাব্যঞ্জক মনে হচ্ছে।

টিকা সংগ্রহ, কোল্ড চেইন বজায় রাখা, সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি টিকা নিবন্ধনে ডিজিটাল সিস্টেম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এখন পর্যন্ত জনগণকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের যে অগ্রগতি হয়েছে, তা বেশ ভালো।

টিকাদানে আমাদের অগ্রগতির একটি বড় কারণ হলো—আমাদের একটি শক্তিশালী এক্সপ্যান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন (ইপিআই) আছে। এ কারণে আমাদের বেশিরভাগ জনস্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার অবস্থা নড়বড়ে হওয়া সত্ত্বেও টিকা কর্মসূচি ভালোভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা এই বিষয়ে যে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, তাও উল্লেখ করার মতো।

এখন টিকা সরবরাহ বাধাহীন হওয়ায় আমরা প্রাথমিক প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠেছি। কিন্তু, তাতে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগা উচিত হবে না। এখনও অনেক কিছু বাকি। কারণ আমাদের অধিকাংশ জনগণ এখনও টিকার প্রথম ডোজ পাননি।

সারা বিশ্বকে শঙ্কায় ফেলে দেওয়া করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন যেহেতু দেশে শনাক্ত হয়েছে, সেহেতু আমাদের টিকাদান কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা উচিত।

ডব্লিউএইচও ইতোমধ্যেই বিশ্বকে ওমিক্রনের ঝুঁকি বিষয়ে সতর্ক করে বলেছে, এর কারণে বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। ইতোমধ্যেই ইউরোপ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো দ্রুত গতিতে ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে করোনার যে কোনো সম্ভাব্য ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলায় সরকারের জনস্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাগুলো প্রস্তুত করা ও উন্নত করা জরুরি। আমাদের মতো দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার দেশে টিকাদান কর্মসূচি শক্তিশালী করার ওপর আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ টিকা হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু কমাবে।

টিকাদান কর্মসূচিকে আরও জোরদার করতে সরকারকে আরও বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনার জন্য বিশেষ কর্মসূচি চালু করতে হবে। গ্রামীণ জনগণকে টিকা দেওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার। কেননা, অনলাইন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ সীমিত।

একইসঙ্গে, এই সময়ে আরও বেশি সংখ্যক শিশুকে টিকা দেওয়ার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কারণ, নতুন ধরনটি শিশুদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে বলে জানা গেছে।

আমরা আশা করি, টিকার সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকার এই বছরের শেষ নাগাদ সবাইকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য পূরণে সফল হবে। দেশে টিকা প্ল্যান্ট স্থাপন আমাদের টিকাদান কর্মসূচিকে আরও জোরদার করবে।

অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English

6 killed as truck, auto-rickshaw collide in Narsingdi

Six people were killed in a head-on collision between a truck and a CNG-run auto-rickshaw at Shibpur in Narsingdi this afternoon

1h ago