মালয়েশিয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা: নিহত ১৪, গৃহহীন ৭১ হাজারের বেশি
মালয়েশিয়ার ১৩টি প্রদেশের মধ্যে ৮টিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং গৃহহারা হয়েছেন ৭১ হাজারের বেশি মানুষ।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেরনামা জানিয়েছে, গত ৬ দিন ধরে এই বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এতে আরও বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ৮ জন পশ্চিমাঞ্চলীয় সেলাঙ্গর ও ৬ জন পূর্বাঞ্চলীয় পাহাং প্রদেশের।
আজ বুধবার সকালে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানায়, প্রবল বৃষ্টির কারণে দেশটির পশ্চিম উপকূলে সমৃদ্ধ ও জনবহুল প্রদেশ সেলাঙ্গরের রাজধানী শাহ আলমের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি বেড়েছে।
শাহ আলম নগর পর্ষদের (এমবিএসএ) ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে, জনগণকে প্লাবিত এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা প্লাবিত এলাকার রাস্তা ব্যবহার করবেন, তাদের সতর্ক থাকতে হবে।
গতকাল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, মালয়েশিয়ায় বন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় জনগণ ও আইনপ্রণেতারা সরকারের তীব্র সমালোচনা করছেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব বন্যা মোকাবিলায় সরকারের দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন।
আগামী দিনগুলোয় আরও প্রবল মৌসুমি বৃষ্টি ও ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বন্যার্তদের সহায়তায় সরকার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত করেছে। এ ছাড়াও, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা কর্মীরা ঘরে আটকা পড়া মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ করছেন।
সপরিবারে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা শাহ আলম এলাকার কার্তিক সুব্রামানি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'বন্যায় আমার ঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। গাড়ি দুটিও নষ্ট হয়েছে।'
২৯ বছর বয়সী কার্তিক আরও বলেন, 'আমার জীবনে এমন ভয়াবহ বন্যা আগে কখনো দেখিনি। ফেডারেল সরকার মানুষের দুর্দশা দূর করতে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।'
সরকারি ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিরোধীদলের এমপি ফুজিয়াহ সালেহ এই পরিস্থিতিকে 'হতাশাজনক' আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি সরকারের 'অযোগ্যতার' প্রমাণ।
তিনি এএফপিকে বলেন, 'সরকার মৌসুমি বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাষ দেয়নি। চরম দুঃখজনক যে, বন্যায় মানুষ মারা যাচ্ছেন।'
এখনো অনেকে নিখোঁজ আছেন উল্লেখ করে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
Comments