গ্রাহকের হাতেরমুঠোয় ডিজিটাল ঋণ

বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ মানুষের জন্য ঋণ নেওয়া এখন খুবই সহজ হয়ে গেছে। বিকাশ ও সিটি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে ডিজিটাল ঋণ সেবা চালু করছে যা ইতোমধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ মানুষের জন্য ঋণ নেওয়া এখন খুবই সহজ হয়ে গেছে। বিকাশ ও সিটি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে ডিজিটাল ঋণ সেবা চালু করছে যা ইতোমধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রায় অর্ধযুগ আগে আলিবাবা ডট কমের একটি অঙ্গসংগঠন অ্যান্ট গ্রুপ ডিজিটাল ক্ষুদ্র-ঋণ সুবিধা চালু করার পর এই সেবার জনপ্রিয়তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, বিকাশে আলিবাবার অংশীদারিত্ব রয়েছে।

বিকাশ গ্রাহকরা এখন তাদের অ্যাপের মাধ্যমেই ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণের আবেদন জানাতে পারেন। আবেদন করার পরপরই তারা ঋণের অর্থ পেয়ে যাবেন এবং ৩টি সমপরিমাণ মাসিক কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুদের হার হবে বছরে ৯ শতাংশ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক গতকাল ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সেবার উদ্বোধন করেন।

অ্যান্টের আলিপে অ্যাপের মাধ্যমে চীনের প্রায় ৭৩০ মিলিয়ন গ্রাহক ক্ষুদ্র-ঋণ ও অন্যান্য সেবা পেয়েছেন যারা প্রতি মাসেই এই সেবা ব্যবহার করেন। এতে রয়েছে ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড সেবা, ব্যক্তি পর্যায়ে অনলাইন নগদ অর্থ ঋণ সেবা এবং ক্ষুদ্র ও মধ্যম ব্যবসায়ীদের জন্য অনলাইন ক্রেডিট সেবা।

সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো (অতি ক্ষুদ্র) ঋণ সেবা চালু করতে বিকাশের স্ট্র্যটেজিক অংশীদার অ্যান্ট গ্রুপ কারিগরি সহায়তা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় ব্যাংকটি ৪৫ হাজার বিকাশ গ্রাহকের কাছে প্রায় ৭ কোটি টাকা ঋণ পৌঁছে দেয়।

সিটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশরুর আরেফিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রাহকদের কাছে দেওয়া ঋণের মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ নন-পারফরমিং হয়েছে এবং ঋণগ্রহীতারা এখনো কিস্তি পরিশোধ করছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'আফ্রিকার দেশগুলোতে, যেমন কেনিয়া, তানজানিয়া ও নাইজেরিয়াতে এই সেবাটির প্রবৃদ্ধি অসাধারণ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এসব দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এই সেগমেন্টে খুবই কম।'

তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের এই নতুন যাত্রা নিয়ে খুবই আশাবাদী।'

বিকাশ গ্রাহকরা কে কত টাকা ঋণ নিতে পারবেন, তা সিটি ব্যাংক নির্ধারণ করবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের ক্রেডিট ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ব্যবহৃত হবে।

প্রারম্ভিক প্রস্তাব হিসেবে সিটি ব্যাংক পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে কোনো প্রসেসিং ফি নেবে না। পরবর্তীতে গ্রাহকদের ঋণের জন্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ প্রসেসিং ফি দিতে হবে।

ঋণের ক্ষেত্রে প্রতিদিনই সুদের হিসেব ও প্রসেসিং হবে। একজন ঋণগ্রহীতা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন এবং এ ক্ষেত্রে যতদিন পর্যন্ত ঋণটি অপরিশোধিত ছিল, ততদিনের জন্যই কেবল সুদ প্রযোজ্য হবে। কোনো আর্লি সেটেলমেন্ট ফি প্রযোজ্য হবে না।

এই সুবিধার আওতায় ২২ লাখ গ্রাহক সম্বলিত প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের ৫ কোটি ৫০ লাখ গ্রাহকের কাছে তাদের সেবা পৌঁছে দিতে পারবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির বলেন, 'ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগের মাধ্যমে অসংখ্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যেখানে ব্যাংকগুলো একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিকাশের বিপুল সংখ্যক গ্রাহককে আরও সৃজনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা দিতে পারে।'

তিনি যোগ করেন, 'এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো ও বিকাশ বেশ কয়েক বছর ধরে যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভরসার সম্পর্ক তৈরি করেছে, তা আরও দৃঢ় হয়েছে। ডিজিটাল অতি-ক্ষুদ্র ঋণ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে।'

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Budget support from WB, IMF, ADB: Bangladesh may get $5.65b by this fiscal year

The government is expecting at least $5.65 billion in budget support this fiscal year from the World Bank, the International Monetary Fund (IMF), and the Asian Development Bank (ADB) to expedite reforms.

6h ago