বাংলাদেশের জোড়া আঘাতের পর ফাওয়াদ-রিজওয়ানের জুটি

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দিনের প্রথম ৫ ওভারের মধ্যে আজহার আলি ও বাবর আজমের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি তুলে নিল বাংলাদেশ। আরও একবার উল্লাস করতে পারত তারা। কিন্তু ফাওয়াদ আলম ক্যাচ দিলেও আবেদন করেনি মুমিনুল হকের দল। ফলে মেলেনি উইকেট। পাকিস্তানের আরেক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান দুবার রিভিউ নিয়ে গেলেন বেঁচে। তাই প্রথম সেশনে স্বাগতিকদের প্রাপ্তি হয়ে থাকল শুরুর ২ উইকেট।

মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা চলছে। মাঠ ভেজা থাকায় নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর শুরু হয় খেলা। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত সফরকারীদের সংগ্রহ ৮৩ ওভারে ৪ উইকেটে ২৪২ রান। ক্রিজে আছেন ফাওয়াদ ১৯ ও রিজওয়ান ২৬ রানে। জোড়া ধাক্কা সামলে তাদের অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটির রান ৪৫।

প্রথম সেশনে খেলা হয়েছে ১৯.৪ ওভার। পাকিস্তান ২ উইকেট খুইয়ে যোগ করেছে ৫৪ রান। আজহারকে ফেরান ইবাদত হোসেন। বাবরকে বিদায় করেন আরেক পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

৬৩.২ ওভারে আগের ২ উইকেটে ১৮৮ রান নিয়ে খেলতে নামে পাকিস্তান। খালেদ তার অসমাপ্ত ওভারটি করার পর আরেক প্রান্ত থেকে বোলিংয়ে আসেন ইবাদত। এই পেসারের নিরীহ একটি ডেলিভারিতে উইকেট হারান আজহার। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৬ রান। ১৪৪ বলের ইনিংসে ৮টি চার মারেন তিনি। আজহারের বিদায়ে ভাঙে পাকিস্তানের ২৪০ বলে ১২৩ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

শর্ট ডেলিভারি পুল করতে চেয়েছিলেন আজহার। তবে ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি ঠিকঠাক। টপ এজ হয়ে বল উঠে যায় উপরে। সহজ ক্যাচটা লুফে নিতে ভুল করেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস।

স্কোরবোর্ডে আর ৪ রান যোগ হতে বিদায় নেন বাবর। তাকে ঝুলিতে পুরে তৃতীয় টেস্টে এসে শেষ হয় খালেদের অপেক্ষার। এই সংস্করণে নিজের প্রথম উইকেটের স্বাদ পান তিনি। নিঃসন্দেহে তার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে উইকেটটি।

অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা বলটি কিছুটা নিচু হয়েছিল। বাবরের প্যাডে লাগার পর আম্পায়ার আঙুল উঁচিয়ে দেন আউটের সিদ্ধান্ত। রিভিউ নিয়েছিলেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার। তাতে কাজ হয়নি। বরং নষ্ট হয় সেটা। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, লেগ স্টাম্প উপড়ে যেত। বাবর সাজঘরে ফেরেন ৭৬ রানে। তার ১২৬ বলের ইনিংসে চার ৯টি ও ছয় ১টি।

শূন্য রানে থাকা অবস্থায় রিজওয়ানকে আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন আম্পায়ার। ইবাদতের ডেলিভারি তার প্যাডে লেগে এক ড্রপ খেয়ে পৌঁছেছিল লিটনের গ্লাভসে। তিনি রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল ছুঁয়েছে ব্যাট।

পরে আরেকবার রিভিউতে জীবন পান এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। তখন রিজওয়ান ছিলেন ১২ রানে। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের ডেলিভারি অনেকখানি টার্ন করে অফ স্টাম্পের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ায় টেকেনি মাঠের আম্পায়ারের দেওয়া এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত।

রিজওয়ানের দুই রিভিউয়ের মাঝে আবেদন না করায় উইকেট থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। ইবাদতের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ফাওয়াদের ব্যাটের নিচের অংশ ছুঁয়ে জমা পড়ে লিটনের গ্লাভসে। কিন্তু বল ব্যাটে লাগেনি ভেবেনি আপিল করেননি কেউ। সেসময় ফাওয়াদের সংগ্রহ ছিল ১২ রান।

ভেজা উইকেটে সহায়তা মেলে পেসারদের। কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে সকালে বেশ ভালো বল করেন দুই পেসার ইবাদত ও খালেদ। তাইজুল আক্রমণে আসার পর পান টার্ন। তবে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজকে বোলিংয়ে আনেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল।

আগের দিন টানা বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দলই হোটেল থেকে বের হয়নি। তবে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় চতুর্থ দিন সকালেই ক্রিকেটাররা চলে আসেন মাঠে। ১০টা ১০ মিনিটে মাঠ পরিদর্শন করে খেলা শুরু হওয়ার সময় জানিয়ে দেন আম্পায়াররা। আবার বৃষ্টি বাগড়া না দেওয়ায় সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মাঠে নামে দুই দল।

মিরপুর টেস্টের শুরু থেকেই হানা দিয়েছে বৃষ্টি। প্রথম দিনে বৃষ্টি ও আলোক স্বল্পতায় খেলা হয় ৫৭ ওভার। দ্বিতীয় দিনে থেমেথেমে চলা বৃষ্টির কারণে মাঠে গড়াতে পারে কেবল ৬.২ ওভার। আর তৃতীয় দিনের পুরোটাই গেছে বৃষ্টির পেটে। একটি বলও গড়াতে পারেনি মাঠে। আম্পায়াররা জানিয়েছেন, চতুর্থ দিনে ৮৬ ওভার বোলিংয়ের চেষ্টা করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

JCD ends Shahbagh protest demanding justice for Shammo

Demonstrators blocked key intersection, sought arrest and trial of accused

38m ago