৩ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৯ পুলিশ

পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এবং এই হার প্রতি বছরই বাড়ছে। প্রায় ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ দুর্ঘটনার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংশ্লিষ্টতা থাকছে।

পুলিশের সদর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ কর্মকর্তাদের সড়ক দুর্ঘটনার হার ২০১৮ সালের তুলনায় গত বছর ৩২ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়াও জানা গেছে, ২০২০, ২০১৯ ও ২০১৮ সালে এ ধরণের দুর্ঘটনার সংখ্যা যথাক্রমে ১৯৮, ১৭৯ ও ১৫০।

৬২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়কে। ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের নিজস্ব পরিবহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনের সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যে জানা গেছে।

কর্মকর্তারা সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে তাদের কর্মস্থল থেকে নিজের জেলায় যাওয়ার পথে অথবা কাজে ফেরার সময় বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে পুলিশের সদর দপ্তর থেকে ফেব্রুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে বা ব্যক্তিগত কারণে মোটরসাইকেলযোগে কর্মকর্তাদের এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

গত ৩ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৬৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান এবং আরও ৩৬০ জন আহত হন। যারা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ মোটরসাইকেলে চালকের আসনে ছিলেন অথবা চালকের পেছনে বসা ছিলেন।

পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যে নিজ কর্মস্থল বা ওয়ার্কস্টেশন ছেড়ে অন্য কোনো গন্তব্যে আসা-যাওয়া করার সময় পুলিশ বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।

একজন কর্মকর্তা জানান, কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়ার সময় তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান, কিন্তু পুলিশের জেলা সুপারকে জানান না। কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলা পুলিশ সুপারকে এ বিষয়টি জানানো আবশ্যক।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে, সাপ্তাহিক ছুটিতে কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্ঘটনায় কোনো কর্মকর্তার মৃত্যু হলে পুলিশ সুপার এ বিষয়ে জ্ঞাত না থাকলেও কাগজে সই করে তাদেরকে 'কর্তব্যরত' দেখিয়ে দেন, যাতে তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণ পান। এ বিষয়টিও একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

গত সেপ্টেম্বরে পুলিশ সদর দপ্তরে ৩ দিন ব্যাপী অপরাধ নিরীক্ষা বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সব জেলার পুলিশ সুপার এবং পুলিশের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্ররা পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদের বরাত দিয়ে জানান, 'আমরা এ ধরণের মৃত্যু চাই না এবং আমাদেরকে এ ধরণের কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে।'

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (পরিকল্পনা এবং গবেষণা) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'সব পুলিশ ইউনিটের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আমরা একটি গবেষণা শুরু করেছি, যাতে এই ঘটনাগুলোকে বিশ্লেষণ করে আমরা এর পেছনের কারণগুলো খুঁজে বের করতে পারি এবং এ ধরণের দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে পারি।'

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

8h ago