জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ অপ্রত্যাশিত নয়
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকের কাছেই এটা অপ্রত্যাশিত মনে হলেও জাপানি রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রথা অনুযায়ী তার এই ঘোষণা মোটেই অস্বাভাবিক নয়।
কারণ, সুগার আকস্মিক এই ঘোষণার আগে জাপানে গুঞ্জন ওঠে তিনি দেশ পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছেন না। তাই, তার পদত্যাগের ঘোষণা ছিল কাঙ্ক্ষিত এবং সময়ের ব্যাপার।
৭২ বছর বয়সী সুগা পদত্যাগ করছেন স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে। ৭০ শতাংশ জন সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসা সুগার মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ৪০ শতাংশ সমর্থন হারিয়েছেন। এর অন্যতম কারণ করোনা মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতা।
জাপানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করেছে। টিকা নিয়ে চলছে হযবরল অবস্থা। করোনা মোকাবিলায় জাপানে জরুরি অবস্থা চলছে। দেশটির ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও টিকাদান কার্যক্রম যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ায় অর্থনৈতিক সংকটও তৈরি হয়েছে। সুগা সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় পরেছেন করোনার মধ্যে অলিম্পিকের আয়োজন করে।
করোনার টিকা আবিষ্কারের প্রাক্কালে ১২ কোটি ৪০ লাখ জাপানি নাগরিকের জন্য ২৯ কোটি ডোজ নিশ্চিতের কথা জানান দিয়েছিলেন সুগা। চলতি মাসের মধ্যেই সবাইকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেশটির সরকার। গত ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা দেওয়া শুরু হলেও আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিদেশে টিকা পাঠানো। দীর্ঘ চেষ্টার পরও জনগণ যখন টিকার জন্য বুকিং দিতে পারছেন না, তখন বিদেশে টিকা পাঠানোকে বাঁকা চোখেই দেখছেন জাপানের সাধারণ মানুষ। যদিও সুগা বলেছেন, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল করোনা মহামারি ঠেকানোর।
২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'জাপানকে পুনর্গঠন করা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমার সরকারের মূল লক্ষ্য।'
জাপানের ইতিহাসের দীর্ঘতম সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে গত বছর সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে স্বাস্থ্যজনিত কারণে পদত্যাগ করলে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ইয়োশিহিদে সুগা।
আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর জাপানের ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) দলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে জয়ী নেতাই জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন। কারণ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে দলটির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
আগামী ১৭ অক্টোবর জাপানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
Comments