করোনা ভ্যাকসিন: বয়সসীমা হচ্ছে ৩০

ঈদের পর করাইল বস্তিতে ও ১৬ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে
কভিড-১৯ টিকা
স্টার ফাইল ছবি

আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বয়সসীমা কমিয়ে ৩০ করার। 
দেশে ভাইরাস সংক্রমণের হার ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় কোভিড টিকাদান কর্মসূচি সংক্রান্ত কমিটির একটি ভার্চুয়াল সভায় গতকাল রোববার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ‘আমরা সুপারিশ করেছিলাম বয়সসীমা ১৮ বছরে নামানোর জন্য, কিন্তু সভায় সিদ্ধান্ত হয় বয়সসীমা আপাতত ৩৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করার এবং পর্যায়ক্রমে সেটিকে ১৮ বছরে নামিয়ে আনার।’ 
এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর টিকাদান কর্মসূচির আওতা বাড়ানো ও বয়সসীমাকে ১৮ বছর করার সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করছি।’ 
তবে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাননি। 
সভা সংশ্লিষ্ট সূত্ররা জানান, সরকার ঈদের ছুটির পর সীমিত ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি সুবিধাসম্পন্ন মানুষদের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাজধানীর বস্তিগুলোতে বসবাসকারী মানুষদের টিকা দেওয়া শুরু করবে। 
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, করাইল বস্তিতে বসবাসকারীদের ঈদুল আজহার পরপরই টিকা দেওয়া হবে।
এছাড়াও সরকার চীন থেকে আরও তিন কোটি ডোজ সিনোফার্মের ভ্যাকসিন কেনার পরিকল্পনা করছে। 
এ পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ মানুষ টিকা নিয়েছেন। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের সরবরাহ ঘাটতির কারণে বাধার মুখে পড়া টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রতি সিনোফার্ম, মডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিন আসার পর আবারো চালু হয়েছে। 
সরকার এ পর্যন্ত বিভিন্ন উৎস থেকে ১ কোটি ৭৯ লাখ টিকা পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভারত ও চীন থেকে উপহার পাওয়া ৩৩ লাখ ও ১১ লাখ ডোজ টিকা। 
১৭ জুলাই পর্যন্ত দেশের ১ কোটি ১১ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৩ লাখ মানুষ দুটি ডোজই পেয়েছেন। 
গতকালের সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৫৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টিকা দেওয়ার। সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ৪৭ হাজার ২৪০ জন রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরের ৬২টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। 
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন ডোজ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপকরণ কক্সবাজারের সিভিল সার্জনের দপ্তরের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। 
জানানো হয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা দেবে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, যারা টিকার জন্য নির্ধারিত জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিন কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে। 
শরণার্থী শিবিরগুলোতে টিকাদান ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। যারা এ সময়ে টিকা নিতে পারবেন না, তাদের ২৫ ও ২৬ আগস্টে টিকা দেওয়া হবে। 
সূত্র জানায়, কর্তৃপক্ষ এখনও সিদ্ধান্ত নেননি শরণার্থীদের কোন টিকা দেওয়া হবে। 
সরকারের টিকাদান কর্মসূচি গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল, যেটি মূলত ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে আসা ভ্যাকসিনের সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে কোভিডের সংক্রমণ অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় নয়াদিল্লী ভ্যাকসিনের রপ্তানি বন্ধ করে দেয় এবং ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হয়। 
বাংলাদেশ ২৬ এপ্রিলে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া স্থগিত করে। এ মাসে সিনোফার্ম ও ফাইজারের টিকা আসার পর আবারও সীমিত আকারে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। 
তবে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরামের কাছ থেকে চালান আসা স্থগিত থাকায় কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষমাণ ১৫ লাখ মানুষ অনিশ্চিত অবস্থায় আছেন। 
এ বছর কোভ্যাক্সের কাছ থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এ চালান পেলে দেশের জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
তবে এ যাবত কোভ্যাক্স থেকে শুধুমাত্র ফাইজারের ১ লাখ ছয় হাজার ও মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে। আজ রাতে এই সুবিধার আওতায় ৩০ লাখ মডার্না ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। 
প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান।

Comments

The Daily Star  | English

MRT-1 unlikely to be ready before 2030

Five years have passed since the country’s first underground metro rail project was approved, but construction of the key structure has not yet begun.

8h ago