বেসরকারি হাসপাতালে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দিচ্ছে সরকার

Antigen.jpg
ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস শনাক্ত করার পরীক্ষা কেন্দ্র ও সেবার পরিধি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করার অনুমতি দিতে যাচ্ছে সরকার।

বর্তমানে শুধু সরকারি হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, কোভিড সংক্রমণের হার সম্প্রতি বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোও এই সেবাটি দিতে চাচ্ছে।

গত ১ জুন র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ ও অন্যান্য বিষয়গুলোর বিস্তারিত জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়েছে, মহামারিকালে বেসরকারি হাসপাতালে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও চালু করা উচিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ফরিদ হোসেন মিয়া গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু, এখনো কোনো উত্তর পাইনি।’

অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হচ্ছে এমন এক ধরনের পরীক্ষা যার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ‘ভাইরাল অ্যান্টিজেন’ শনাক্ত করা যায়, যেটি রোগীর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটিয়েছে। এই পরীক্ষা পদ্ধতিতে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হয় এবং এটি যেকোনো চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে করা যায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিঠি অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০ টাকার বিনিময়ে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এখন এই সেবাটিকে বেসরকারি পর্যায়ে চালু করা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই পরীক্ষা পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি কিটের জন্য খরচ হবে ৫০০ টাকা। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রতিটি রোগীর কাছ থেকে এ পরীক্ষার জন্য সার্ভিস চার্জসহ সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা করে নিতে পারবে।

গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর কোভিড পরীক্ষার সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হয়।

র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে একজন সম্ভাব্য করোনা রোগী নমুনা সংগ্রহের ৩০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার ফল জানতে পারেন।

ফরিদ হোসেন মিয়া বলেছেন, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র যারা ‘এ’ ও ‘বি’ তালিকাভুক্ত এবং যাদের আরটি-পিসিআর সুবিধা রয়েছে, তারাই এই পরীক্ষাটি পরিচালনা করার সুযোগ পাবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ৩৩৪টি সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা সুবিধা রয়েছে।

কোভিড-১৯ শনাক্ত করার জন্য আরটি-পিসিআরকেই মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এটি বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত। তবে, এই পরীক্ষার ফল পেতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।

যদি অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ফলাফলে কোনো রোগীর নেতিবাচক ফল আসে, তাহলে নমুনাগুলো আবারও আরটি-পিসিআর যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষাগুলো সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের প্যাথোজেনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ও শ্বাসযন্ত্রের সিঙ্কটিয়াল ভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত করার জন্য।

কোভিড-১৯ ভাইরাসের ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন পরীক্ষাকে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার চেয়ে কম স্পর্শকাতর একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সিডিসির মতে, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষাটি সবচেয়ে কার্যকর হয় যখন আক্রান্ত ব্যক্তি কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে থাকেন। সেসময় সাধারণত ভাইরাল লোডটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের গতকাল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলোকে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে পরীক্ষা পরিচালনা করার অনুমতি দিয়েছি। এই সুবিধাটির বিস্তার বাড়ানোর জন্য আমরা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকেও অনুমতি দেবো। আমরা এখন খরচগুলো পর্যালোচনা করছি এবং আমরা আশাবাদী যে শিগগিরই অনুমতি দেওয়া যাবে।’

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

MRT-1 unlikely to be ready before 2030

Five years have passed since the country’s first underground metro rail project was approved, but construction of the key structure has not yet begun.

7h ago