লালমনিরহাট

পাঠকের বাড়িতে বই পৌঁছে দিচ্ছেন কলেজ শিক্ষার্থী জামাল

সারপুকুর যুব ফোরাম পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা কলেজ শিক্ষার্থী জামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সারপুকুর যুব ফোরাম পাঠাগারে প্রায় ছয় হাজার বই আছে। পাঠাগারের তালিকাভুক্ত সদস্য আছেন প্রায় দেড় হাজার। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পাঠাগারে গিয়ে বই পড়তে পারছেন না পাঠকরা। তারা যেন বই পড়া থেকে বঞ্চিত না হন, সেজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই পৌঁছে দিচ্ছেন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা কলেজ শিক্ষার্থী জামাল হোসেন।

ফোনে পছন্দের বইয়ের কথা জানিয়ে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি সেটি নিয়ে পাঠকের বাড়িতে পৌঁছে যান। পাঠাগার থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত পাঠকের বাড়িতে বই পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

সারপুকুর যুব ফোরাম পাঠাগারে নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনও রাখা হয়। তালিকাভুক্ত সদস্য ছাড়াও অনেকে এখানে আসতেন বই ও পত্রিকা পড়তে। কিন্তু, দেশে গত বছর থেকে করোনা পরিস্থিতিতে পাঠাগারে পাঠকদের আনাগোনা নেই। তাই, কলেজ শিক্ষার্থী জামাল হোসেন নিজেই পাঠকদের কাছে বই পৌঁছে দিচ্ছেন।

ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জামাল হোসেন সারপুকুর ইউনিয়নের টিপার বাজার এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছেন বই পড়া আন্দোলন।

সারপুকুর এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী আবু জাহেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জামালের বই পড়া আন্দোলনে সম্পৃক্ত থেকে বেশ উপকৃত হচ্ছি। করোনা পরিস্থিতির কারণে পাঠাগারে গিয়ে বই পড়তে পারছি না। কিন্তু জামালকে ফোন দিলে তিনি বাড়িতে বই পৌঁছে দিচ্ছেন।’

টিপার বাজার এলাকার স্কুল শিক্ষার্থী ভক্ত চন্দ্র রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি ফোন দিলে জামাল ভাই বাড়িতে এসে নতুন নতুন বই পৌঁছে দেন। কখনও কখনও তিনি তার পছন্দমতো বইও এনে পড়তে দিচ্ছেন।’

সারপুকুর যুব ফোরাম পাঠাগারে কৃষি, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্মীয়, গবেষণামুলক, ছোটদের গল্প কবিতাসহ সব ধরনের বই আছে বলে জানান প্রতিষ্ঠাতা জামাল হোসেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘পাঠকদের বই পড়া যেন বন্ধ না হয়, সেজন্য আমি বাড়ি বাড়ি বই পৌঁছে দিচ্ছি। আমাকে ফোন করলে পাঠকের বাড়িতে গিয়ে বই পৌঁছে দেই। পাঠকের বই পড়া শেষে ফোন দিলে আবার সেটি নিয়ে আসি।’

জামাল হোসেন সেলুন লাইব্রেরি চালু করেও ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।

তিনি জানান, সারপুকুর যুব ফোরাম পাঠাগারের অধীনে ৩০টি সেলুন লাইব্রেরি পরিচালিত হয়। আরও ২০টি সেলুন লাইব্রেরি তালিকাভুক্ত করা হলেও, করোনা পরিস্থতির কারণে তা চালু করা যায়নি।

টিপার বাজার গ্রামের আব্দুল সাত্তার ও সাহেরবানু বেগমের ছেলে জামাল হোসেন (২১) স্কুলজীবনে সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে পাঠাগারটি গড়ে তোলেন এবং গ্রামে বই পড়ার আন্দোলন শুরু করেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘বই মানুষকে আলোকিত করে। আমি চাই বই মানুষের নিত্যসঙ্গী ও জীবনের খোরাক হোক। তাই আমি নিজেকে বই পড়ার আন্দোলনে সারাজীবন সম্পৃক্ত রাখতে চাই।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 45 lakh cases pending in courts

Each HC judge is burdened with 6,552 cases, while Appellate Division judges are handling 4,446 cases each, and lower court judges 1,977 cases each.

1d ago