আগামী সপ্তাহে ঢাকায় ফাইজার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু

আগামী সপ্তাহে রাজধানীর চারটি টিকাদান কেন্দ্র থেকে ফাইজারের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করবে সরকার।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে নিবন্ধন সম্পূর্ণ করেছেন এবং টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন, তারাই এই টিকা পাবেন। ফাইজার ভ্যাকসিন শুধুমাত্র ঢাকা শহরে দেওয়া হবে।’

চারটি নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রের মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গত সোমবার ফাইজার ভ্যাকসিনের এক লাখ ছয় হাজার ডোজের একটি চালান ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। বৈশ্বিক ভ্যাকসিন সরবরাহ প্রকল্প কোভ্যাক্সের আওতায় এই ভ্যাকসিনগুলো পেয়েছে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেহেতু ফাইজার ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করার জন্য প্রায় মাইনাস ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্টোরেজ প্রয়োজন হয়, তাই এগুলোকে রাজধানীর বাইরে পাঠানো হবে না। এগুলো সংরক্ষণ করার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা স্বাভাবিক রেফ্রিজারেশন মাত্রার চেয়ে অনেক কম।

তারা আরও বলেছেন, শূন্য দশমিক তিন মিলিলিটারের সিরিঞ্জ দিয়ে এই ভ্যাকসিনটি দেওয়ার ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিবন্ধনকৃত মানুষ ছাড়াও ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্য কর্মী এবং অন্যান্য যেসব ফ্রন্টলাইনাররা এখনও তাদের প্রথম ডোজটি পাননি, তাদেরকে ফাইজারের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

২৭ মে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) জরুরি ব্যবহারের জন্য ফাইজার ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়।

বাংলাদেশ কোভ্যাক্সের কাছ থেকে ৬৮ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা করছে।

জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে আগামী সপ্তাহে উপহার হিসেবে আরও ছয় লাখ ডোজ সিনোফার্ম ভ্যাকসিন পাবে।

‘চীনের কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন যে, ভ্যাকসিনগুলো সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে এসে পৌঁছবে’, বলেন তিনি।

১২ মে চীনের কাছ থেকে উপহার হিসেবে বাংলাদেশ পাঁচ লাখ সিনোফার্ম ভ্যাকসিন পেয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দিয়ে এই ডোজগুলো দেওয়া শুরু করেছে।

চীন থেকে ভ্যাকসিন কেনা প্রসঙ্গে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, চীন কর্তৃপক্ষকে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এখন তাদের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

২৬ এপ্রিল মজুদ কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া স্থগিত করে। একই কারণে অনেক জায়গায় দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়াও স্থগিত করা হয়।

সরকারের হাতে মাত্র তিন লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের মজুত রয়েছে।

বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পর্যায়ে ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের নাগরিকদের জন্য গণটিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়।

সরকার চলমান ভ্যাকসিন নিবন্ধন প্রক্রিয়াটিকে ৫ মে স্থগিত করে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার চালান পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচী বাঁধার মুখে পড়ে।

চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের ছয় মাসে তিন কোটি ভ্যাকসিন ডোজ পাওয়ার কথা ছিল।

সেরাম ইনস্টিটিউট প্রথম ৫০ লাখ ডোজ জানুয়ারি মাসে পাঠিয়েছিল, কিন্তু তারা পরের মাসে মাত্র ২০ লাখ ডোজ পাঠায়। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে আর কোনও চালান পাঠাতে পারেনি।

 

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Cancer patients cut off from vital lifeline

All six radiotherapy machines of the NICRH have been out of order for 19 days, depriving over 200 cancer patients of their scheduled therapy every day.

11h ago