চীনে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছয় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন

চীনের বেইজিংয়ে এক নারী শিশুর সঙ্গে খেলা করছেন। দেশটিতে গত ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে জন্মহার। ছবি: এপি

চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গত কয়েক দশকের তুলনায় সবচেয়ে কম। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৪১ কোটি।

আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে গত ১০ বছরে গড় বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। এর আগের ১০ বছর ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ।

দ্য গার্ডিয়ান বলছে, চীনে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১৯৬০ এর দশকের পর গত দশকে ছিল সবচেয়ে কম।

চীনের গত ১০ বছরের আদমশুমারি গত এপ্রিলে প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল। ২০২০ সালের শেষ দিকে এই আদমশুমারির কাজ শেষ হয়। চীনে প্রায় ৭০ লাখ কর্মী বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রধান নিং জিঝে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত বছর ১ কোটি ২০ লাখ শিশু জন্ম নিয়েছে। ২০১৬ সালে এ সংখ্যাটি ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ। সংখ্যাটি উল্লেখযোগ্য হারেই কমেছে।

তিনি বলেছেন, ‘তবে, এই সংখ্যাটি এখনো যথেষ্ট। দেশ আরও উন্নত হওয়ার পাশাপাশি জনগণের শিক্ষার হার বৃদ্ধি বা তাদের ক্যারিয়ারসহ অন্যান্য বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ায় জন্মের হার হ্রাস পাচ্ছে।’

সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীনের প্রতিবেশী জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াতেও দম্পতিদের আরও বেশি সন্তান নিতে সরকার নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এরপরও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওই দুই দেশে জন্মহার কমেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে গত বছর প্রথমবারের মতো জন্মের চেয়ে বেশি মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। ফলে, বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারের দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

জন্মহার কমে যাওয়ার ঘটনা বেইজিংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জনসংখ্যা হ্রাস এড়াতে কীভাবে দম্পতিদের আরও বেশি সন্তান নিতে আগ্রহী করে তোলা যায় এ নিয়ে নতুন করে ভাবছে বেইজিং।

জনসংখ্যার হার কমে গেলে একটি দেশে বয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় তরুণদের সংখ্যা কম হয়, যা সমাজ কাঠামোর জন্য সমস্যা-সঙ্কুল। এমনটি ঘটলে ভবিষ্যতে প্রবীণদের সহযোগিতা করার জন্যে পর্যাপ্ত কর্মী পাওয়া যাবে না।

২০১৬ সালে চীনা সরকার বিতর্কিত এক সন্তান নীতিমালার বিপরীতে দম্পতিদের দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়। ফলে, পরের দুই বছর জন্মহার বাড়লেও দেশটির জন্ম হারের যে নিম্নমুখীতা তা পাল্টে দেওয়া যায়নি।

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ে সু বলেছেন, ‘দুই সন্তান নীতিমালা জন্মহারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। তবে এটি স্বল্পমেয়াদী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।’

বিবিসি আরও জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধি কমাতে চীন এক সন্তান নীতিমালা চালু করে। যেসব পরিবার এ নিয়ম লঙ্ঘন করতো তাদের জরিমানা, কর্মসংস্থান হ্রাস ও কখনো কখনো জোরপূর্বক গর্ভপাতের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।’

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

5h ago