জাপানে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ল
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সংক্রমণ রোধে নতুন করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে জাপান সরকার। আজ শুক্রবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
এর আগে, রাজধানী টোকিও, ওসাকা, কিওতো ও হিয়োগো শহরে ১১ মে পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।
নতুন করে আইচি ও ফুকুওকা প্রদেশেও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আগামী ১২ মে থেকে সেখানে জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইয়োশিহিদে সুগা জানান, চারটি প্রদেশের গভর্নরদের মতামত এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
নতুন করে জরুরি অবস্থা জারি হওয়া আইচি ও ফুকুওকা প্রদেশের শহরগুলোর জনসাধারণকে যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকার আহ্বান জানান সুগা।
তিনি রাত ৮টার মধ্যে রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া ও অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন না করার অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সুগা বলেন, ‘পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি দৃশ্যমান না হওয়ায় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোসহ হোক্কাইদো, গিফু ও মিয়াগি প্রদেশের ওপর বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, কানাগাওয়া, চিবা ও সাইতামা আগে থেকেই বিশেষ নজরদারিতে রয়েছে।’
আসন্ন টোকিও অলিম্পিক ও প্যারা-অলিম্পিকের আয়োজন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুগা বলেন, ‘জনগণের সুস্বাস্থ্য রক্ষা সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তাই, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের বিষয়ে সুগা জানান, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। এ ব্যাপারে ফাইজার প্রাথমিকভাবে পাঁচ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে। প্রতিদিন পাঁচ মিলিয়ন মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান সুগা।
করোনার পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় আসন্ন গ্রীষ্মকালীন টোকিও অলিম্পিক ও প্যারা-অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অলিম্পিক আয়োজনের আর মাত্র দুই মাসের মতো বাকি। এরইমধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে এবারের আসরের আয়োজন সম্ভব নয় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
তবে, শুধু জাপানের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই হবে না, অংশ নেওয়া দেশগুলোর করোনা পরিস্থিতিরও উন্নতি হতে হবে।
গতকাল টোকিও’র গভর্নর ইয়ুরিকো কোইকে বলেন, ‘জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানোর মতো অবস্থায় রাজধানী নেই।’
তিনি জানান, তার বিশ্বাস- জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করা দরকার।
আজ শুক্রবার টোকিওতে একদিনে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯০৭ জন। ওসাকাতে শনাক্ত হয়েছে এক হাজার পাঁচ জন, হিয়োগোতে ৪৯৩ জন, কিওতোতে ১৪৬ জন, ফুকুওকাতে ৪৯২ জন এবং আইচিতে ৪৪৩ জন।
আজ জাপানে একদিনে মোট চার হাজার ৩৮৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জাপানে মোট ছয় লাখ ৩২ হাজার ৯২৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং ১০ হাজার ৭৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সূত্র: জাপান টাইমস
Comments