আপিল বিভাগেও ইরফান সেলিমের জামিন বহাল

irfan selim
ইরফান সেলিম। ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে

নৌবাহিনীর কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আদালত।

আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পূর্ণ আপিল বেঞ্চ ভার্চুয়াল শুনানি শেষে হাইকোর্টের জামিনাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খরিজ করে এ আদেশ দেন।

ইরফান সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ে ইরফান সেলিমের কারামুক্তিতে আইনি আর কোনো বাধা থাকলো না।’

আদালতে ইরফান সেলিমের পক্ষে আরও ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

গত ১৮ মার্চ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ নৌবাহিনীর কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় ইরফান সেলিমকে জামিন দিয়েছিলেন।

সেই রায়ের পরে সাঈদ আহমেদ রাজা জানিয়েছিলেন, ‘ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে আদালত তিনটি মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন। আর দুটি মামলায় ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আদালতের নথি পৌঁছালেই কাশিমপুর কারাগার থেকে ইরফান সেলিম মুক্তি পাবেন।’

গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ইরফান সেলিমসহ (৩৭) চার জনের নামে এবং দুই-তিন জনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইরফান ছাড়া বাকি তিন অভিযুক্ত হলেন— ইরফানের সহযোগী এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), ব্যক্তিগত দেহরক্ষী মো. জাহিদ (৩৫) ও গাড়িচালক মো. মিজানুর রহমান (৩০)।

এজহারে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর রাত পৌনে ৮টার দিকে নীলক্ষেত থেকে পাঠ্যবই কিনে লেফটেনেন্ট ওয়াসিফ ও তার স্ত্রী মোটরসাইকেলে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরছিলেন। পথে ল্যাবএইড হাসপাতালের কাছে রাস্তায় একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-৫৭৩৬) তাদের পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। পরিচয় দেওয়ার পরও গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি তাদের গালিগালাজ করেন ও হত্যার হুমকি দেন।

এরপর কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডের কাছে সেই গাড়িটিকে থামিয়ে নৌ কর্মকর্তা আবারও পরিচয় দিলে গাড়ির আরোহীরা সবাই নেমে এসে তাকে কিলঘুষি মেরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যান।

মামলার পর দিন ২৬ অক্টোবর রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানাধীন দেবীদাস ঘাট লেনে হাজী সেলিমের পৈত্রিক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। অভিযানে তাদের বাসা থেকে বিদেশি মদ ও অবৈধ ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। অবৈধ অস্ত্র, ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিম এবং ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে তার দেহরক্ষী জাহিদকে কারাদণ্ড দেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ঘটনার পরে ইরফান সেলিমকে কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না পেয়ে লালবাগ থানা পুলিশ অস্ত্র ও মাদক মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিতে আবেদন জানিয়ে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদলতের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র মামলা এবং ১ মার্চ মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি পান ইরফান সেলিম।

আরও পড়ুন

হাইকোর্টে ইরফান সেলিমের জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই

মাদক মামলা থেকেও অব্যাহতি পেলেন ইরফান সেলিম

অস্ত্র মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি

ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক মামলা

কাউন্সিলর পদ থেকে ইরফান সেলিমকে বরখাস্ত

সেলিমপুত্রের রং নম্বরে ডায়াল

ভ্রাম্যমাণ আদালতে ইরফান সেলিমের ১ বছরের কারাদণ্ড

ইরফান সেলিমের গাড়ি চালক ১ দিনের রিমান্ডে

হাজী সেলিমের ছেলে র‌্যাব হেফাজতে

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

11h ago