‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’র সাবিনা ইয়াসমিন
বাংলা গানের বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের জন্মদিন আজ। ১৯৫৪ সালে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শুভ জন্মদিনে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লেখা-সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য' গানটির কথা বারবার মনে পড়ছে।
কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী গত পাঁচ দশকে ১৪ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। প্লেব্যাকের জন্য ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ২০১২ সালে তাকে ‘বাংলা একাডেমি’ সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেওয়া হয়।
গানে সাবিনা ইয়াসমিনের যাত্রা শুরু হয় মাত্র সাত বছর বয়সে। সে সময়ে তিনি স্টেজ প্রোগ্রামে অংশ নিতেন। তিনি ১৩ বছর গান শিখেছেন ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে।
বেতারের ‘খেলাঘর’ অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন সাবিনা। এই অনুষ্ঠানে তার সঙ্গী ছিলেন আরেক বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ বেগম (রহমতুল্লাহ)।
১৯৬২ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে রবিন ঘোষের সংগীত পরিচালনায় চিত্রপরিচালক এহতেশামের ‘নতুন সুর’ ছবিতে প্রথম ছোটদের গানে অংশ নেন।
১৯৬৭ সালে স্কুলে পড়ার সময়ই ১৯৬৭ সালে স্কুলে পড়ার সময়ই জহির রায়হান পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ ছবিতে আলতাফ মাহমুদের সুর-সংগীতে ‘মধু জোছনা দীপালি’ গানটির মাধ্যমে বড়দের গানে প্লেব্যাকশিল্পী হিসেবে সাবিনার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
তবে ১৯৬৭ সালে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা আলতাফ মাহমুদের সুরে ‘অবুঝ মন’ ছবির ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ গানটির পর সাবিনা ইয়াসমিনকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে: ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’, ‘চিঠি দিও প্রতিদিন, চিঠি দিও’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান’, ‘দুঃখ ভালবেসে প্রেমের খেলা’, ‘এ সুখের নেই কোন সীমানা’, ‘বরষার প্রথম দিনে’ ও ‘আমার ভাঙা ঘরে ভাঙা চালা’।
তার দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে রয়েছে: ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’, ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘ও আমার বাংলা মা’, ‘মাঝি নাও ছাড়িয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ’ ও ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতা’।
ভারতের বরেণ্য সুরকার আরডি বর্মণের সুরে গান করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। কিশোর কুমার ও মান্না দের সঙ্গে দ্বৈতগানেও কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
জন্মদিনে সাবিনা ইয়াসমিন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, ‘আজকের দিনটি অন্য সব দিনগুলোর মতোই কাটবে। করোনা মহামারির এই সময়ে জন্মদিনের কোন আয়োজন থাকছে না। এখন মানুষের বেঁচে থাকাটায় বড় কথা।’
‘মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো। মানুষের ভালোবাসায় চেয়ে বড় কিছু নেই। জন্মদিনে মানুষের ভালোবাসায় আমার বড় উপহার,’ যোগ করেন তিনি।
Comments