শুভ জন্মদিন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
১৯৩৯ সালের এই দিনে তিনি কলকাতার পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ বোন, ছয় ভাইয়ের মধ্যে তিনিই সবার বড়। তাই ভাই-বোনদের কাছে তিনি ‘লালু ভাই’। আর দেশের মানুষের কাছে পরিচিত ‘জ্ঞানের বাতিঘর’ হিসেবে।
তিনি হলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তার পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের কচুয়া থানার কামারগাতি গ্রামে। তার বাবা আযীম উদ্দিন আহমদ ছিলেন একজন স্বনামধন্য শিক্ষক। মায়ের নাম করিমুন্নেসা। বাবার শিক্ষক হিসেবে অসামান্য সাফল্য ও জনপ্রিয়তা শৈশবেই তাকে এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট করে।
১৯৫৫ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন প্রফুল্লচন্দ্র কলেজ, বাগেরহাট (বর্তমানে সরকারি পিসি কলেজ, বাগেরহাট) থেকে ১৯৫৭ সালে। ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও ১৯৬১ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
সে বছরই তিনি শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর সিলেট মহিলা কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও ঢাকায় ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজে (বর্তমানে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ) শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি ঢাকা কলেজে যোগদান করেন।
ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়, তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে। তরুণ বয়সে তিনি কবিতা ও কল্পকাহিনি লিখতেন। অধ্যাপক সায়ীদ বহু প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা লিখেছেন।
১৯৭৮ সালে অধ্যাপক সায়ীদ প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ‘আলোকিত মানুষ চাই’— সারাদেশে এই আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিসেবে গত কয়েক দশক ধরে তৈরি করে চলেছেন পাঠক, আলোকিত করে যাচ্ছেন মানুষকে।
বাংলাদেশে টেলিভিশনের বিনোদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব।
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার, জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার, একুশে পদকসহ দেশ-বিদেশে বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বয়সকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে তিনি এখনো জ্ঞানের মশাল জ্বালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিচ্ছেন জ্ঞানের আলো। শুভ জন্মদিন আমাদের ‘আশার বাতিঘর’ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
Comments