কোভিড-১৯ হাসপাতাল: রোগীর ভোগান্তি কমাতে জরুরি সমন্বিত পদ্ধতি
করোনাভাইরাস সম্পর্কিত জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি সুপারিশ করেছে, কোভিড-১৯ চিকিত্সার জন্য নির্দিষ্ট করা হাসপাতালগুলোকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে হবে। তাহলেই রোগীদের ভোগান্তি কমানো সম্ভব।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, যদি এই সুপারিশ কার্যকর করা হয় তাহলে কোনো একটি হাসপাতালে সিট না পাওয়া রোগী ও রোগীর সঙ্গে থাকা মানুষদের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়াতে হবে না।
তিনি বলেন, ‘উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো করোনা রোগীর জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সিট না পাওয়া যায়, তাহলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই অন্যান্য করোনা হাসপাতালের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেবে। যেখানে সিট খালি আছে টোকেন দিয়ে সেখানে রোগীকে রেফার করবে।’
সরকারের ব্যবস্থা করা অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমেই সেই রোগীকে রেফার করা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এই পরিবহন ব্যবস্থাও কমিটির সুপারিশের একটি অংশ।
তিনি জানান, এই সাধারণ উদ্যোগটি রোগীদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমাবে।
১৯ এপ্রিল গঠিত এই কমিটি ২৮ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই পদ্ধতির সমন্বয় করবে জানিয়ে অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সরকার কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে অবিলম্বে এ ব্যবস্থা (নেটওয়ার্ক তৈরির) নেওয়া উচিত। কারণ শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা ছাড়া এর জন্য আর কিছুই লাগবে না।’
তিনি জানান, সরকার কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করেছে। তবে হাসপাতালগুলোকে এখনও একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনেনি এবং অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা জানান, সিট খালি আছে কিনা তা রোহীদের জানানোর জন্য চারটি মোবাইল নম্বর রয়েছে। যেগুলো শুধু এই কাজের জন্যই নিবেদিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত আমাদের কর্ম কৌশল আপডেট করছি এবং রোগীদের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করছি।’
কমিটি আরও উন্নত চিকিত্সার জন্য কোভিড হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের সুপারিশ করেছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সরকার আমাদের জানিয়েছে যে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে এই কমিটি করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিল এবং তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
অধ্যাপক শহীদুল্লাহ জানান, সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে পরীক্ষার ফলাফল এক দিনের মধ্যে দেওয়া হবে। কারণ এই প্রক্রিয়াটিতে কোনো প্রকার বিলম্ব হওয়ার অর্থ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলা।
অধ্যাপক নাসিমা জানান, সকল সুপারিশ রাতারাতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। তাই ধাপে ধাপে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
Comments