ইতালির ছোট্ট এক শহরে যেভাবে ভালো আছেন ১৮০০ বাংলাদেশি!

ইতালির আর্জিগনানো শহর। ছবি: সংগৃহীত

আর্জিগনানো (Arzignano) ইতালির ভিচেঞ্জা প্রদেশের একটি ছোট্ট শহর। শহরটি  সাধারণত ভিচেঞ্জার একটি  শিল্পনগরী। চামড়া শিল্পের জন্য সারা বিশ্বে শহরটির বেশ কদর আছে। ভিচেঞ্জা থেকে শহরটি দূরুত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার। খুবই সাজানো-গোছানো এই ছোট শহরের জনসংখ্যা ১৭ হাজারের কিছু বেশি। এখনকার তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি থেকে ১৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।

এই শহরে বাস করেন বাংলাদেশের কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থেকে ইতালিতে কাজ করতে যাওয়া ৩৬ বছরের  মহাম্মেদ বাহাদুর। ফোনে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এখানে চামড়া কারখানাগুলোতে কাজ করেন ১,৮০০ এরও বেশি বাংলাদেশি। এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলেও জানান বাহাদুর।

কুমিল্লার লাকসাম থেকে আর্জিগনানো শহরে বাহাদুরের সঙ্গে থাকেন ফারহান রিংকু নামের ৩৪ বছরের আরেক বাংলাদেশি। কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন লকডাউনে আছি। প্রয়োজন হলে কেবল একটি পরিবার থেকে মাত্র একজন বাইরে বের হতে পারে। আমরা ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখানকার বাংলাদেশিদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি। এখন পর্যন্ত সবাই ভালো আছি।’

এই শহরের করোনাভাইরাসে কয়েকজন স্থানীয় অধিবাসী আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

সারা ইতালিতে যখন মৃত্যুর মিছিল চলছে তখন কীভাবে এই শহরের মানুষ সুরক্ষিত আছে জানতে চাইলে বাহাদুর বলেন, ‘ইতালিতে করোনা রোগী প্রথম শনাক্ত হয় জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে। মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি ভেনিস, মিলানের দিকে। ভেচেঞ্জারে এখনও তেমন সংখ্যক মানুষ মারা যায়নি।’

আর্জিগনানো শহরটি লকডাউন করা হয়েছে আজ থেকে ১৪ দিন আগে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হতে পারেন না। সবাইকে একটি করে কার্ড দেওয়া হয়েছে। বাসার সবচেয়ে কাছে যে সুপারমার্কেট, সেখান থেকেই আপনাকে খাবার কিনতে হবে, কেউ দূরে গিয়ে খাবার কিনতে পারবে না। চলমান লকডাউন আরও ১৫ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, জানান এই প্রবাসী।

সুপারমার্কেটগুলোতে খাবারের কোনো অভাব নেই, খাবার আছে প্রচুর। খাবারের দাম বাড়েনি। ওষুধপত্রের কোন অভাব নেই এখানে। সবাই এই লকডাউন স্বেচ্ছায় মেনে চলছেন। যার ফলে এখানে বাংলাদেশিরা ভালো আছেন।

‘সরকার আমাদের মাসিক বেতনের ৮০ শতাংশ প্রত্যেকের ব্যাংক একাউন্টে জমা করছে। এক্ষেত্রে দেশি ও প্রবাসীদের মধ্যে কোন ফারাক নাই। ঘরে বসেই সবাই তার বেতনের ৮০ শতাংশ পাচ্ছেন! ফলে কাজ হারানো বা বেতন না পাওয়ার কোন সমস্যা এখানে নেই,’ যোগ করেন বাহাদুর।

তিনি আরও জানান, এই মাসের ৭ তারিখে তার দেশে যাওবার কথা থাকলেও পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে যেতে পারেননি। এই শহর থেকে হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র বাংলাদেশে যেতে পেরেছে বলে জানান তিনি।

মোস্তফা সবুজ, দ্য ডেইলি স্টারের বগুড়া সংবাদদাতা

Comments

The Daily Star  | English
How artistes flamed cultural defiance in July

How artistes flamed cultural defiance in July

From stage to street, artistes and activists led a cultural revolt against brutality and censorship

8h ago