জলবায়ু পরিবর্তন: আরও বেশি বন্যা আশঙ্কায় বাংলাদেশ
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতে আরও বেশি এবং মারাত্মক বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে প্রকাশিত হয়েছে জাতিসংঘের এক সমীক্ষায়।
গত ২১ মার্চ প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০২০’ শিরোনামে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যার পাশাপাশি দূষণ ও নিম্নমানের ভূগর্ভস্থ পানির উৎসের কারণে বাংলাদেশ খরার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অব্যাহত জলবায়ু পরিবর্তন মূলত পানির মাধ্যমে জনজীবনে প্রভাব ফেলবে। ‘মানুষের মৌলিক চাহিদার জন্য পানির সহজলভ্যতা, গুণমান ও পরিমাণকে প্রভাবিত করবে। সম্ভাব্য কয়েক বিলিয়ন মানুষের জন্য পানি ও স্যানিটেশন হুমকির মুখে পড়বে।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের আগস্টের বর্ষায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ৪০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে প্রায় এক হাজার ৩০০ জনের এবং ত্রাণ শিবিরে ঠাই হয়েছে প্রায় এক দশমিক এক মিলিয়ন মানুষের।
সমীক্ষার পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ২১৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হতে পারে বন্যার কারণে। বন্যার কারণে পানির উৎস দূষণ ও স্যানিটেশনের সুবিধা নষ্ট করার ফলে টেকসই পানি এবং স্যানিটেশন সেবা সবার জন্য পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।’
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমেরিটাস আইনুন নিশাত গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে বন্যার পরিমাণ বাড়ছে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বন্যা হওয়ার সময়। আমরা এখন বছরের প্রথম দিকে যেমন বন্যা দেখি, তেমনি দেখি বছরের শেষদিকে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা (আইডাব্লিউআরএম) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ‘নিম্ন মাঝারি’ মানের কাজ করে।
আইনুন নিশাত বলেন, ‘আমাদের সমন্বিত পানি নীতি মূলত কৃষিকাজে সহায়তা করার জন্যই জোরালো। মৎস্য, পরিবেশ ও অন্যান্য ক্ষেত্রের জন্য আমাদের নির্দিষ্ট পানি নীতি নেই। পরিবেশ ব্যবস্থাপনার জন্য এই পরিস্থিতি খুব খারাপ।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ নিজস্ব পানি সম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারবে না এবং নতুন আন্তঃসীমান্ত চুক্তি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত, ভারতের সঙ্গে থাকা ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদীর মধ্যে কেবলমাত্র গঙ্গার পানি ভাগাভাগি করার চুক্তি কার্যকর হয়েছে।’
Comments