বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই ত্বকীদের হত্যার বিচার হয় না: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি: স্টার

ত্বকী হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল ৬ মার্চ। হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে তখন থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ‘সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ’। বিচারের দাবি উচ্চকিত রাখতে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ সমাজের বিশিষ্টজনেরা। বৈঠকের পর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী টেলিফোনে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

ত্বকী হত্যার বিচার না হওয়া দেশের সার্বিক বিচারহীর সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি এটাকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বলা হয়। আলোচিত হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে সাগর-রুনি হত্যার বিচার অসংখ্যবার পেছানো হলো, তনু হত্যা, নিতু হত্যার বিচার হলো না। পুরো দৃশ্যপটের এটা একটা অংশ। তদন্তকারী সংস্থাগুলো যে হত্যাকারীদের ধরতে পারে না—তেমনটা নয়। ত্বকীর ব্যাপারে তো প্রতিবেদন তৈরি করেই ফেলেছিল। কিন্তু এক জায়গায় গিয়ে তারা বাধার মুখে পড়েছে।’

তিনি বলেন, হত্যার শুধু বিচারই নয়, এই যে ত্বকীদের হত্যা করা হচ্ছে এটাই প্রতিরোধ হওয়া দরকার। বিচার প্রক্রিয়ার পুরো ব্যবস্থাটাই জনবান্ধব না। এ কারণে ত্বকি হত্যার বিচারহীনতার ঘটনাটিকে আমরা প্রতীক হিসেবে দেখছি। বাংলাদেশের কিশোররা নিরাপদে নেই। ত্বকী তো লাইব্রেরিতে যাচ্ছিল। তার বাবার সঙ্গে শত্রুতা থেকে সেখানে তাকে খুন করা হয়।

শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ কমে যাওয়াকে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, আমি সবসময় যেই কথাটা বলে এসেছি—একটা ধনতান্ত্রিক ও আমলাতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থার মধ্যে আমরা রয়েছি। এই ব্যবস্থাটা বদলানো দরকার। এই ব্যবস্থায় নিরাপত্তাও পাওয়া যাবে না, বিচারও পাওয়া যাবে না। পিরোজপুরের বিচারককে বদলির ঘটনাটা সেটাকেই প্রতিষ্ঠিত করে।

আমাদের দেশে সাংস্কৃতিক নবজাগরণ দরকার। আমারা রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করলেও সাংস্কৃতিক যে পরিবর্তনের দরকার ছিল তা আমাদের দেশে হয়নি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্যগুলোর একটা ছিল এমন সমাজ নির্মাণ করা যেখানে মানুষের অধিকার ও সুযোগের সমতা থাকবে। সেটা আমরা অর্জন করতে পারিনি। পুরোনো রাষ্ট্রকাঠামোই বহাল থেকে গেছে। এই সত্যগুলো এখন উন্মোচিত হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Govt calls for patience as it discusses AL ban with parties

Taken the initiative to introduce necessary amendments to the ICT Act, says govt

1h ago