তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

এনু-রূপনের টাকায় চাপা পাপিয়া কাহিনী?

এক দিনের ব্যবধানে নতুন বিস্ময়। অথবা গতকাল যা ছিল বিস্ময়, আজ তা অতি সাধারণ! পাপিয়া প্রতিদিন বারের বিল পরিশোধ করেছে আড়াই লাখ, মাসে ৯০ লাখ টাকা। ৫৯ দিনে হোটেল ভাড়া দিয়েছে ৮১ লাখ টাকা। টাকার এই অঙ্ক নিয়ে গতকাল সারাদিন আলোচনায় ছিল পাপিয়া। পাপিয়ার আলোচনায় বাড়তি রসদ জুগিয়েছে ভিডিও ক্লিপ, কল লিস্ট, বড় বড় নেতাদের সঙ্গে তার ছবি।

এক দিনের ব্যবধানে নতুন বিস্ময়। অথবা গতকাল যা ছিল বিস্ময়, আজ তা অতি সাধারণ! পাপিয়া প্রতিদিন বারের বিল পরিশোধ করেছে আড়াই লাখ, মাসে ৯০ লাখ টাকা। ৫৯ দিনে হোটেল ভাড়া দিয়েছে ৮১ লাখ টাকা। টাকার এই অঙ্ক নিয়ে গতকাল সারাদিন আলোচনায় ছিল পাপিয়া। পাপিয়ার আলোচনায় বাড়তি রসদ জুগিয়েছে ভিডিও ক্লিপ, কল লিস্ট, বড় বড় নেতাদের সঙ্গে তার ছবি।

২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বহুজনকে স্বস্তি দিয়ে সামনে এসেছে এনামুল হক ইনু ও রূপন ভূঁইয়া ভাইদ্বয়ের কাহিনী। টাকার সিন্দুকের বহু রূপকথা আছে বাংলাদেশে, আছে অন্যান্য দেশেও।

এনু-রূপন ভাইদ্বয়ের কাহিনী রূপকথার চেয়ে খুব পিছিয়ে নেই। তাদের একটি বাসার পাঁচটি সিন্দুক থেকে র‍্যাব উদ্ধার করেছে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআর, এক কেজি সোনা, নয় হাজার ২০০ মার্কিন ডলার, ১১ হাজার ৫৬০ বাথসহ আরও কয়েকটি দেশের মুদ্রা। এনু-রূপনের টাকার বিস্ময়ের কাছে যেন চাপা পড়ে গেছে পাপিয়া কাহিনী। এক দিন আগেও মানুষ কত অল্পতে বিস্মিত হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদের পতনের সময়ের একটি ঘটনা। পতনের পর এরশাদের বাসার বালিশ-তোষকের নিচে পাওয়া গিয়েছিল নগদ দুই কোটি টাকা।

‘কত টাকা!’

মানুষ বিস্মিত হয়েছিল। যতদূর মনে পড়ছে সেই সময়ের পাঠক প্রিয় ‘উন্মাদ’ পত্রিকা এরশাদের একটি শাস্তির প্রস্তাব দিয়েছিল। দুই কোটি টাকা দুই বা এক টাকার নোটে রূপান্তর করে একটি রুমে ছড়িয়ে দিতে হবে। জোরে ফ্যান ছেড়ে দিতে হবে। এরশাদ রুমে বসে সেই টাকা গুনবেন। যতবার গুণতে ভুল করবেন, ততবার প্রথম থেকে গুনবেন। বহুদিন রসিকজনের আলোচনায় স্থান করে রেখেছিল উন্মাদ’র প্রস্তাব।

দুই ভাই এনামুল হক ইনু ও রূপম ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

এখন এনু-রূপনের ২৬ কোটি টাকা দুই টাকার নোটে রূপান্তর করলে, তা রাখার জন্যে কয়টি রুম দরকার হবে! এ ছাড়া কিছুদিন আগেও এদের থেকে আরও পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই সময় উদ্ধার করা সোনার পরিমাণ ছিল সাড়ে সাত কেজি। দুই বারে জব্দ করা নগদ টাকার পরিমাণ প্রায় ৩১ কোটি। জেলে থাকা এনু-রূপন ভাইদ্বয়কে টাকা গুনার শাস্তি দিলে তারা অখুশি হবেন বলে মনে হয় না। কারণ ভাইদ্বয়ের স্থায়ী পেশা জুয়া। নেশা নগদ টাকা এবং সেই টাকা দিয়ে জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাট কেনা। এখন পর্যন্ত তাদের ২৪টি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। আরও পাওয়া যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। জুয়ার টাকায় সিন্দুক ভরা, বাড়ি কেনার সঙ্গে রাজনৈতিক পদও কিনেছিলেন ভাইদ্বয়। একজন গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং আরেকজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ কিনেছিলেন বলে এখন জানা যাচ্ছে।

ভাইদ্বয় গত জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার হয়ে অন্য ক্যাসিনো সম্রাটদের দাপটে চাপা পড়ে গিয়েছিলেন। নিজেরা দাপটের সঙ্গে আবার আলোচনায় ফিরে, পাপিয়া কাহিনী চাপা দিতে সহায়তা করলেন! দুশ্চিন্তার আতঙ্কে গত রাতে যাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটেছে, আজ হয়ত তারা একটু ঘুমাতে পারবেন।

s.mortoza@gmail.com

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka, Beijing to ink 20 MoUs but loan deal unlikely

Dhaka and Beijing will sign around 20 MoUs, including some on trade and economic cooperations, during Prime Minister Sheikh Hasina’s visit to China that begins today.

8h ago