দশকজুড়ে সাফল্য বাংলাদেশের নারীদের, কী অপেক্ষায় সামনে?

asia_cup
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের গেল এক দশকের (২০১০-১৯) ক্রীড়াঙ্গনের দিকে তাকালে চোখে পড়বে নারী ক্রীড়াবিদদের সাফল্যগাঁথা। তারা যে কেবল পাদ-প্রদীপের আলোয় আসতে শুরু করেছেন তা-ই নয়, ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের অর্জনের সিংহভাগ কৃতিত্বে নিজেদের নাম লেখাতে শুরু করেছেন। গেল ১০ বছরে ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের ঊর্ধ্বমুখী সাফল্যের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনুমিতভাবেই শীর্ষে থাকবে ক্রিকেট ও ফুটবল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে নারী ক্রিকেট দল এবং নারীদের বয়সভিত্তিক ফুটবল দলগুলো।

দলগত সাফল্যের পর নজর দেওয়া যাক ব্যক্তিগত অর্জনে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখানো ক্রীড়াবিদদের তালিকাটা বেশ লম্বা। দেশের জন্য তারা নিয়ে এসেছেন গৌরবের উপলক্ষ। তাদের মধ্যে সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, ফুটবলার সাবিনা খাতুন, দাবাড়ু শারমিন সুলতানা শিরিন ও আর্চার ইতি খাতুনের নাম উল্লেখযোগ্য।

এমন সাফল্য অর্জন ও দেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে নারীরা সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার বেড়াজাল অতিক্রম করেছেন। সেসব লড়াইয়ের গল্প যেমন নাড়া দেয় হৃদয়কে, তেমনি উঠতি ক্রীড়াবিদদের দেয় আত্মবিশ্বাসের জ্বালানী। এই উন্নতির চিত্র আরও ফুটিয়ে তোলে যে দেশের অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াক্ষেত্রেও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেয়েরা তো দেশের নারী ফুটবলের ইতিহাসটাই বদলে দিয়েছে! গ্রামীণ পরিবেশে থেকেও একসঙ্গে সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে নিজেদের বাবা-মাকে তারা বোঝাতে পেরেছেন যে তারা খেলাধুলায় এগিয়ে যেতে চায়। পাশাপাশি তাদের মতো আরও অনেকে মেয়ের জন্য তারা পরিণত হয়েছেন উদাহরণে, যুগিয়েছেন আশার আলো।

সবমিলিয়ে গেল দশকটা ছিল দেশের নারী ক্রীড়াঙ্গনের জন্য ভীষণ উদ্দীপক। ইতিবাচক হাওয়ার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে সেখানে। তবে এখনও যেতে হবে বহু দূর। নিশ্চিত করতে হবে যেন নারী ও পুরুষ অ্যাথলেটদের মধ্যে যেন কোনো বেতন বৈষম্য না থাকে। সুযোগ-সুবিধার ভারসাম্য তৈরি করতে হবে। ক্রীড়াঙ্গনকে নারীর জন্য সর্বোচ্চ নিরাপদ করে গড়ে তুলতে হবে।

যদিও গেল দশকের উন্নতিতে উৎসাহিত হওয়ার মতো অনেক কারণই রয়েছে, তবুও রয়ে গেছে একটা বিরাট ও কঠিন প্রশ্ন। বর্তমানে ক্রীড়াঙ্গনে যে কাঠামো ও পদ্ধতি বিদ্যমান, সেখানে কি নারীরা খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে আগ্রহী হন এবং খেলার মাধ্যমে নিজেদের স্বপ্ন-লক্ষ্য পূরণ করার যথেষ্ট নিশ্চয়তা পান? গেল ১০ বছরের চিত্র থেকে দেখা যায়, প্রায় সকল ক্ষেত্রে নারীরা নিজেদের উদ্যমে, প্রতিভায় ও প্রচেষ্টায় সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন। বিদ্যমান কাঠামোর ভূমিকা সেখানে উল্লেখ করার মতো কিছু নয় এবং বিগত দশকগুলোতে যেসব প্রতিবন্ধকতা ছিল তার অনেকগুলো এখনও নারীদের বাধাগ্রস্ত করে চলেছে। অ্যাথলেটদের উপরে যৌন নিপীড়নের ঘটনা এখনও শঙ্কিত করে তোলে এবং নারী ক্রীড়াঙ্গনের জন্য সামগ্রিক উন্নয়নের পথে এটি বরাবরই অন্তরায় হয় আছে। এসবের মাঝে ইতিবাচক বিষয় হলো, নারী ক্রীড়াবিদরা, বিশেষ করে ক্রিকেটাররা সম্প্রতি তাদের বেতন বৈষম্য নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন, নিজেদের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

womens_championship

এটা অবশ্য মোটেও ভালো শোনায় না, যখন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার ঋতু মণি এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও পুরনো প্রতিবন্ধকতাগুলোর মুখোমুখি হওয়ার গল্প বলেন, ‘ক্রিকেটার হওয়ার পথটা আমার জন্য একেবারেই সহজ ছিল না। যখন আমি ছেলেদের সঙ্গে খেলতে শুরু করেছিলাম, আমার প্রতিবেশিরা আমাকে তিরস্কার করত। আমাকে দারিদ্র্যের সঙ্গেও লড়াই করতে হয়েছে। তবে আমি আমার ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ সে আমাকে সব ধরনের সমর্থন দিয়ে গেছে।’

প্রখ্যাত সাবেক টেনিস খেলোয়াড় জোবেরা রহমান লিনু, যিনি ১৬ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের একমাত্র নারী ক্রীড়াবিদ হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠিয়েছেন, তিনি গেল দশকের নারী ক্রীড়াঙ্গনের সাফল্য ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বলেছেন, ‘বিভিন্ন ইভেন্টে আমরা সাফল্য পেয়েছি। বিশেষ করে ক্রিকেট ও ফুটবলে। সেখানে পৃষ্ঠপোষকতাও বেশি। অন্যান্য ইভেন্টে কিন্তু সেভাবে নেই। তবে আমাকে বলতে হচ্ছে যে আমরা যতটা আশা করেছিলাম, ততটা এগোতে পারিনি। আমার মতে, এখানে মূল বাধা হলো আর্থিক বিষয়টি। এখানে ঘাটতি আছে। খেলার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ খুব কম। ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া তো দূরের ব্যাপার, ভাববার অবকাশই কম!’

তিনি যোগ করেছেন, ‘আমাদের দেশে দেখা যায়, মূলত দরিদ্র বা নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসে নারী অ্যাথলেটরা। উচ্চবিত্ত বা সচ্ছল পরিবার থেকে সেভাবে আসে না। এর কারণ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। অবস্থাপন্ন পরিবারের বাবা-মা এবং নারীরা অন্য পেশায় গিয়ে  তাছাড়া এখানে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। আর্থিক নিশ্চয়তা না থাকলে বাধা-বিপত্তির ভেতর দিয়ে কেউ যেতে চায় না।’

কেবল দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসের সাফল্য দিয়ে গেল দশকের নারীদের সাফল্য পরিমাপ করার সঙ্গে অবশ্য একমত নন লিনু। এশিয়ান পর্যায়েও অর্জনের ঝুলি সমৃদ্ধ করার প্রত্যাশায় আছেন তিনি, ‘১৯৮০ সালে এশিয়ান গেমস টেবিল টেনিসে আমি পঞ্চম স্থান লাভ করেছিলাম। ৪০ বছর পেরিয়ে গেল। এখনও সেই অর্জনের পুনরাবৃত্তি হয়নি কিংবা কেউ ছাপিয়ে যেতে পারেনি। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমি ফেডারেশন থেকে ন্যূনতম সুবিধা পেয়েছি, যা হলেই নয়। এখনও কি সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে?’

পারভিন নাছিমা নাহার পুতুল একজন সাবেক নারী ক্রীড়াবিদ ও বর্তমানে নারী সংগঠক। তিনি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের সাংগঠনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তার মতে, সাফল্যের ধারা বজায় রাখতে তৈরি করতে হবে নারীবান্ধব অবকাঠামো, ‘গেল দশকে নারী ক্রীড়াবিদ যারা এগিয়ে গেছেন, যারা দেশকে অনেক কিছু উপহার দিয়েছেন, তারা কিন্তু ব্যক্তিগত ইচ্ছাশক্তি, ব্যক্তিগত চাহিদা ও ব্যক্তিগত স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে গেছেন। অল্প সুযোগ-সুবিধার ভেতরে নারীরা এত সুন্দরভাবে খেলা উপস্থাপন করে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে গৌরব বয়ে আনে, এটা খুবই দারুণ ব্যাপার। যেহেতু নারীরা ভালো করছে, তাদের জন্য কেন অর্থ খরচ করা হবে না? সাংগঠনিক কাঠামোতে যে নারী উপস্থিতি থাকা দরকার, সেদিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। খেলোয়াড়রা এত ভালো করছে, অথচ তাদের জন্য না আমরা নারী কোচের ব্যবস্থা করতে পারছি, না পারছি নারী ফিজিও, ম্যানেজার বা ট্রেনার দিতে।’

mabia and shila

নারী অধিকার কর্মী কাশফিয়া ফিরোজ দেশের অনেক নারী ক্রীড়াবিদের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা ও গবেষণা থেকে তিনি বলেছেন, গেল দশকে নারীদের অর্জনে উৎসাহী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ আছে। কিন্তু লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করার দিক থেকে এখনও ক্রীড়াঙ্গন অনেক পিছিয়ে, ‘নারীরা চ্যাম্পিয়ন হয়-স্বর্ণপদক জেতে। কিন্তু এরপরও তাদের পেছনে যতটা বিনিয়োগ করা উচিত, ততটা কী হয়? তাদের নিরাপত্তা, পুষ্টি, আর্থিক দিকগুলোর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কি আদৌ ভাবা হয়ে থাকে? ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে বাধাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, আমরা এখনও সমতা নির্ধারণ করতে পারিনি। অর্থাৎ এই সময়ে এসেও আমরা নারীকে নারী এবং পুরুষকে পুরুষ হিসেবে দেখছি।’

‘একটা বিষয় দেখা যায় যে আমাদের দেশে ক্রীড়াঙ্গনে সাধারণত আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও গ্রাম থেকে আসা নারীদের বিচরণ বেশি। এক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ হলো, শহর অঞ্চলের বা সচ্ছল পরিবারের বাবা-মায়েরা খেলাকে সন্তানের ক্যারিয়ার হিসেবে ভাবতে পারেন না। আবার গ্রামের বাবা-মায়েরাও যে সন্তানদের খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করেন, তা-ও না। বরং নিজেদের অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে, বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসার প্রবণতা থেকে নারীরা উঠে আসে। খেলার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চায় তারা,’ যোগ করে বলেছেন তিনি।

সাফল্যের তালিকা ও নারী ক্রীড়াবিদ-সংগঠক-বিশ্লেষকদের মতামতে এটা বোঝা যায় যে, গেল দশকে ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীরা সাফল্য অর্জন করেছেন। কিন্তু নতুন দশকের শুরুতে তারা জুড়ে দিয়েছেন একটি প্রশ্ন- এই সাফল্য কি টেকসই? প্রশ্ন থাকে আরও একটি- নারীদের অনন্য ব্যক্তিগত উদ্যম ও প্রচেষ্টার সঙ্গে তাল মেলাতে ক্রীড়াঙ্গনের বর্তমান কাঠামো কি পরিবর্তিত হবে? যদি এসবের উত্তর ‘না’ হয়, তাহলে এটা নিশ্চিত যে গেল দশকের সাফল্য কেবল একটা ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়েই থাকবে, ধারাবাহিকতায় রূপ নেবে না!

দশকজুড়ে নারীদের যত অর্জন:

এসএ গেমস, ২০১০ ঢাকা

ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরে ছয় জন নারী ক্রীড়াবিদ ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ পদক জয় করেন। শুটিংয়ে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে শারমিন আক্তার রত্না, কারাতের কাতায় ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে জ উ প্রু ও কুমিতে ৪৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে মরিয়ম খাতুন বিপাশা, তায়কোয়ান্দোর ৪৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে শারমিন ফারজানা রুমি ও ৪৯ কেজি ওজন শ্রেণিতে শাম্মি আক্তার এবং উশুর ৫২ কেজি  ওজন শ্রেণিতে স্বর্ণ জেতেন ইতি ইসলাম।

দলগত ইভেন্ট থেকে আসে আরও দুটি পদক। কারাতের দলগত কাতায় স্বর্ণ জেতেন জ উ প্রু, উ সাইনু মারমা ও মুন্নি খানম। শুটিংয়ে দলগত ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে সোনা জেতেন শারমিন আক্তার রত্না, সাদিয়া সুলতানা ও তৃপ্তি দত্ত।

এসএ গেমস, ২০১৬ শিলং-গৌহাটি

শিলং-গৌহাটি আসরে মোট চারটি স্বর্ণ জিতেছিল বাংলাদেশ। এর তিনটিই জিতেছিলেন নারীরা। সাঁতারে ৫০ ও ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে মাহফুজা খাতুন শিলা জোড়া স্বর্ণ জেতেন। এসএ গেমসের এক আসরে বাংলাদেশের কোনো নারী ক্রীড়াবিদের দুটি ব্যক্তিগত স্বর্ণ জয়ের এটিই ছিল প্রথম নজির। তাছাড়া দেশের প্রথম নারী সাঁতারু হিসেবেও স্বর্ণ জয়ের ইতিহাস লিখেছিলেন তিনি। তার মতোই অনন্য কীর্তি গড়েছিলেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। ভারোত্তোলনে ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে সোনা জিতেছিলেন তিনি।

archery

এসএ গেমস, ২০১৯ কাঠমুন্ডু-পোখারা

২০১০ আসরে দেশের মাটিতে ১৮টি স্বর্ণ পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। সে রেকর্ড ভেঙে গেল বছরের ডিসেম্বরে ১৯টি স্বর্ণ পদক জেতে বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত স্বর্ণের স্বাদ নেন ছয় জন নারী ক্রীড়াবিদ। ভারোত্তোলনে আবার সাফল্য আনেন মাবিয়া। এবার ৭৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্বর্ণ জেতেন তিনি। ফেন্সিংয়ে স্যাবার একক ইভেন্টে বাংলাদেশকে প্রথম স্বর্ণ এনে দেন ফাতেমা মুজিব। কারাতের কুমি ইভেন্টে ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে মারজান আক্তার প্রিয়া ও ৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে হোমায়রা আক্তার অন্তরা সেরা হন। আর্চারি কম্পাউন্ড এককে সোমা বিশ্বাস ও রিকার্ভ এককে ইতি খাতুন দেশের নাম উজ্জ্বল করেন।

আর্চারিতে কম্পাউন্ড দলগত ইভেন্টে সুস্মিতা বণিক, শ্যামলি রায় ও সোমা এবং দলগত রিকার্ভে ইতি, মেহনাজ আক্তার মনিরা ও বিউটি রায় স্বর্ণ পান। এছাড়া রিকার্ভ মিশ্র-দলগত ইভেন্টে ইতি ও কম্পাউন্ড মিশ্র-দলগত ইভেন্টে সুস্মিতা স্বর্ণ জেতেন। এক আসরে তিনটি স্বর্ণের স্বাদ নিয়ে অনন্য কীর্তি গড়েন মাত্র ১৪ বছর বয়সী ইতি।

পাশাপাশি দলীয় ইভেন্ট ক্রিকেট থেকেও স্বর্ণ আদায় করে নেয় সালমা খাতুনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মেয়েরা।

ক্রিকেট

বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক শিরোপা হাতে ওঠানোর বছরখানেক আগেই ২০১৮ সালের জুনে সালমারা চ্যাম্পিয়ন হয়ে আলোড়ন তৈরি করেন! মালয়েশিয়ায় এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে ভারতকে হারিয়ে শিরোপার উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।

ফুটবল

মূল দল না পারলেও গেল দশকের শেষ ভাগে বয়সভিত্তিক নারী দলগুলো সাফল্য পেয়েছে। ২০১৭ সালে দেশের মাটিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিলেন মারিয়া মান্ডা, মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুনরা। পরের বছর ভুটানে সাফ সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপেও শিরোপা জেতে বাংলাদেশ।

২০১৭ ও ২০১৯ সালে পরপর দুবার এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। দুটি আসরই অনুষ্ঠিত হয় থাইল্যান্ডে। পরেরটিতে প্রতিযোগিতার ইতিহাসে নিজেদের প্রথম পয়েন্টের দেখা পায় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দুবার এগিয়ে গিয়েও শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ২-২ ব্যবধানে ড্র করে মেয়েরা।

Comments

The Daily Star  | English

New uniform, monogram sans boat on the cards for police

According to police sources, a new monogram for the Bangladesh Police has already been determined. It will no longer feature a boat

1h ago