বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ অধিনায়ক না থাকলে অবাক হব: ডমিঙ্গো
ভারত সফরের পর থেকেই নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় ছুটিতে আছেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। ছুটির মধ্যেও অবশ্য তার চোখ থাকছে টিভি পর্দায়। বিপিএলে বাংলাদেশের কে কেমন করছেন, নজর রাখছেন কোচ। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আছে অনেকগুলো টেস্ট, সঙ্গে দলের আদল আর নেতৃত্ব- এসব কিছু নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে মুঠোফোনে তিনি জানিয়েছেন নিজের ভাবনা।
এমনিতে ছুটিতে আছেন, তবু সেখান থেকেই তো মনে হয় বিপিএল দেখছেন। জাতীয় দলের তারকাদের পারফরম্যান্স কেমন হচ্ছে?
ডমিঙ্গো: যদিও এখনো টুর্নামেন্টের অনেক বাকি, তবু ভালোই হচ্ছে। মুশফিক সেদিন নব্বই রান করল, দারুণ ব্যাট করল। মাহমুদউল্লাহ কাল রান পেল। ইমরুল রানের মধ্যেই আছে। সৌম্যও রান পাচ্ছে। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক পারফরম্যান্স আসছে বলা যায়।
কিন্তু বোলারদের কী অবস্থা। বিশেষ করে মোস্তাফিজের ব্যাপারে তো নির্বাচক হাবিবুল বাশারও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
ডমিঙ্গো: মোস্তাফিজকে খুব কঠিন সময়ে বল করতে হয়। খেলার ওই পর্যায়ে এটা হতেই পারে যে তার বল থেকে রান বেরিয়ে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টিতে এমন হয়। কারণ তাকে চাপের মধ্যে বল করতে হয়। এছাড়া আল-আমিন যেভাবে খেলছে তাতে আমি মুগ্ধ। শফিউল দারুণ করছে।
কোনো নতুন পেসারকে কী আপনার মনে ধরেছে?
ডমিঙ্গো: আমি একজন স্পিনারের কথা বলব। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম (নাসুম আহমেদ)। সে ভালো করছে, বেশ বুদ্ধি খাটিয়ে বল করছে।
শার্ল ল্যাঙ্গাফেল্ট চলে গেলেন, সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। একটা ধাক্কা না?
ডমিঙ্গো: শার্লের চলে যাওয়া একটা বড় ক্ষতি তো বটেই। সে এর মধ্যেই কয়েকজন বোলারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। তবে আমি নিশ্চিত আরও বড় কোনো নাম (বোলিং কোচ) এসে এটা পুষিয়ে দেবে।
সাকিব নেই, তামিমকেও সব সময় পাওয়া যাচ্ছে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের নতুন আদল দেখার সম্ভাবনা আছে?
ডমিঙ্গো: কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় তো এর মধ্যেই দেখছেন। (আমিনুল ইসলাম) বিপ্লব আছে, নাঈম (শেখ) এলো। আফিফ তরুণ খেলোয়াড়। দলে বেশ কয়েক জনই তো তরুণ। বিশ্বকাপের আর কেবল ৮ থেকে ১০ মাস বাকি। আমরা এই খেলোয়াড়দেরই যত বেশি সম্ভব সুযোগ দিতে চাই।
আপনার তো নিশ্চয়ই একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে। এদিকে আবার ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্যারিয়ার শেষের দিকে। কাল বলেছেন, জাতীয় দলে এখন কী হচ্ছে তিনি জানেন না। ওয়ানডে দলের ভবিষ্যৎ, নতুন নেতৃত্ব নিয়ে কোনো ভাবনা আছে?
ডমিঙ্গো: মাশরাফি এখনো ওয়ানডে অধিনায়ক। সামনের কয়েক মাসে ওয়ানডে নেই, সে সব ফরম্যাটেও খেলে না। কাজেই জাতীয় দলের এই মুহূর্তের অবস্থা তার না জানাটা বোধগম্য।
অন্য ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব নিয়ে কতটা খুশি? দেশের ক্রিকেটে একটা নেতৃত্বের সংকট কি দেখছেন না? ভারতে মুমিনুলের টেস্ট অধিনায়কত্বও সমালোচিত হয়েছে।
ডমিঙ্গো: আমার মনে হয়, মাত্র দুই টেস্ট দেখে কারো সমালোচনা করাটা খুব নিষ্ঠুর আচরণ। মুমিনুল দারুণ খেলোয়াড়। সে খুব ভালো অধিনায়ক হতে পারে, কেবলই তো শুরু করল। বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে মাত্র দুই টেস্টের অধিনায়কত্ব দিয়ে তাকে বিচার করা-সমালোচনা করা হবে একেবারেই অন্যায়। তার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমার ধারণা, সে একজন সেরা নেতা হয়ে উঠতে পারবে।
আর টি-টোয়েন্টিতে তো স্থায়ী অধিনায়ক চূড়ান্ত হলো না এখনো। মাহমুদউল্লাহ কেবল ভারত সফরে অধিনায়ক ছিলেন। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কাউকে দেখেন?
ডমিঙ্গো: মাহমুদউল্লাহ খুব ভালো করেছে ভারতে, তার অধিনায়কত্ব খুব ভালো ছিল। এই নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে আমি বসব, দেখব সামনে কী করা যায়। কিন্তু আমি এইটুকু বলতে পারি, বিশ্বকাপের আছে আর ৮-৯ মাস। আগে অধিনায়কত্ব করেনি এমন কাউকে অধিনায়ক করার সময় এটা না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে বোর্ডের সঙ্গে আমার কথা হবে। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ অধিনায়ক না থাকলে আমি খুবই অবাক হব।
শেষ প্রশ্ন, সার্বিক দল পরিচালনার প্রক্রিয়া নিয়ে আপনি খুশি তো?
ডমিঙ্গো: হ্যাঁ, আমি বেশ সন্তুষ্ট। কোচ, নির্বাচক, খেলোয়াড় এবং তাদের পারফরম্যান্স মিলিয়ে উন্নতির ধাপে এগুতে হয়। আমি সময়টা উপভোগ করছি। প্রক্রিয়ার মধ্যে দারুণ মেধাবী আর অভিজ্ঞ কিছু খেলোয়াড় আছে। গত কয়েক মাসে এখানকার সিস্টেম সম্পর্কেও অনেক কিছু শিখেছি। হ্যাঁ, বলা যায় উপভোগ করছি।
Comments