এসএ গেমস ২০১৯: আগের চেয়ে ভালো করতে প্রত্যয়ী বাংলাদেশ
নেপালে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ১৩তম আসর শুরু হচ্ছে রবিবার (১ ডিসেম্বর) থেকে। এই অঞ্চলের সাতটি দেশের ক্রীড়াবিদদের মিলনমেলায় মুখরিত হয়ে উঠবে দেশটির রাজধানী কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম। সেখানে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠতে যাচ্ছে দশ দিনব্যাপী ক্রীড়াযজ্ঞের।
তিনটি শহরে অনুষ্ঠিত হবে এসএ গেমস- কাঠমুন্ডু, পোখারা ও জানাকপুর। ২৬টি ডিসিপ্লিনে মোট ৩১৭টি স্বর্ণপদকের জন্য লড়াই করবেন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার প্রতিযোগীরা। নয় বছর পর ক্রিকেট ফিরেছে এসএ গেমসে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে গলফ ও কারাতে।
বাংলাদেশ এবার পাঠিয়েছে ৫৯৫ সদস্যের বিশাল বহর। এদের মধ্যে ক্রীড়াবিদ ৪৬২ জন এবং কর্মকর্তা ১৩৩ জন। একটি ডিসিপ্লিন (ট্রাইলথন) বাদে বাকি সবকটিতে অংশ নিচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
তিন বছর আগে ভারতের গৌহাটি ও শিলংয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এসএ গেমসে হতাশ করেছিল বাংলাদেশ। অংশগ্রহণকারী আট দলের (তখন আফগানিস্তানও সাউথ এশিয়ান অলিম্পিক কমিটির সদস্য ছিল) মধ্যে তারা হয়েছিল পঞ্চম। বাংলাদেশ সবমিলিয়ে ৭৫টি পদক জিতলেও স্বর্ণ ছিল মাত্র চারটি। এবারে সেই ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে দারুণ কিছু করার প্রত্যয় বাংলাদেশের।
গেল আসরে সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা দুটি স্বর্ণ জিতেছিলেন। ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও শ্যুটার শাকিল আহমেদ একটি করে স্বর্ণ এনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। তবে এবারের আসরে আরও বেশি স্বর্ণপদক জেতার প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ। এর মূল কারণ দুটি। প্রথমত, বেশ কয়েকটি ইভেন্টে অংশ নিচ্ছে না ভারত ও পাকিস্তান। দ্বিতীয়ত, আগের চেয়ে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এবার নেপালে উড়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা।
আগের দিন সাংবাদিকদের কাছে বাংলাদেশ দলের শেফ দ্য মিশন আসাদুজ্জামান কোহিনুর বলেছেন, ‘কারা অংশ নিচ্ছে বা কারা অংশ নিচ্ছে না, এসব নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা নিজেদের নিয়ে ভাবছি। আর এটা বুঝতে পেরেছি যে আগের আসরের চেয়ে এবার আমরা অনেক বেশি ভালো করব। এটা বলা কঠিন যে আমরা কতগুলো স্বর্ণপদক জেতার লক্ষ্য রাখছি। তবে আমি আশা করছি যে এবার আমাদের স্বর্ণপদকের সংখ্যা দুই অঙ্কে পৌঁছাবে।’
বাংলাদেশের স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্যের তালিকায় স্বাভাবিকভাবেই উপরের দিকে আছে ক্রিকেট। ছেলেদের ও মেয়েদের দুই বিভাগেই অংশ নিচ্ছে অনূর্ধ্ব-২৩ দল। তবে বয়সসীমার বাইরেও তিন জন করে খেলোয়াড় রাখার সুযোগ থাকায় শক্তিশালী দল নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। ছেলেদের দলকে নেতৃত্ব দেবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দলে আছেন সৌম্য সরকারও।
দুই বিভাগেই বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-২৩ দল। কারণ ভারত ও পাকিস্তান অংশ নিচ্ছে না। কদিন আগেই ইমার্জিং কাপে লঙ্কানদের সহজে হারিয়েছিল ছেলেরা। আর মেয়েদের অধিকাংশ তরুণ হওয়ায় বলতে গেলে গোটা জাতীয় দলই অংশ নিচ্ছে এসএ গেমসে।
ফুটবলেও স্বর্ণ জেতার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ। এই অঞ্চলের সেরা দল ভারত অংশ নিচ্ছে না এবার। আর গেল দেড় বছরে জাতীয় ও বয়সভিত্তিক ফুটবল দলের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় স্বপ্নটাও নাগালের খুব কাছাকাছি।
শ্যুটিংয়ে গেলবারের সাফল্যের পুনরাবৃত্তি যেন করতে পারেন শাকিল, থাকছে সেই প্রত্যাশা। কমনওয়েলথ গেমসে দুবার স্বর্ণজয়ী আবদুল্লাহ হেল বাকির দিকেও তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। তবে শ্যুটিং কর্মকর্তাদের কথা-বার্তায় খুব বেশি আশ্বস্ত হওয়ার উপায় নেই। অথচ এই ইভেন্ট থেকে একসময় নিয়মিতভাবে স্বর্ণ পেত বাংলাদেশ।
আর্চারিতে রয়েছে মোট ১০টি স্বর্ণ। ভারত নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় বাংলাদেশই এই ডিসিপ্লিনে টপ ফেবারিট। আর সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন দেশের তারকা আর্চার রোমান সানা।
Comments