ঢাকায় ৪ মাসে এডিস মশা বেড়েছে ৬ গুণ

Aedes

বর্ষা শুরু আগে প্রাপ্তবয়স্ক এডিস মশার সংখ্যা যা ছিলো, তা বর্ষায়  বেড়ে হয়েছে ছয়গুণ। আর মূলত এ কারণেই দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। সরকারের সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত জরিপে দেখা যাচ্ছে- শুধু এডিস মশার সংখ্যাই নয়, মশার লার্ভার ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অর্থাৎ, সেসব লার্ভা থেকে মশা বের হলে আগামী দিনগুলোতে মশার সংখ্যা আরো অনেক বেড়ে যাবে।

গত ১৭ জুলাই ঢাকায় শুরু হওয়া এই জরিপ শেষ হয় গতকাল। জরিপ চলাকালে দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে ১ হাজার বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

প্রাথমিক তথ্যে দেখা যায়, প্রায় অর্ধেক বাড়িতে বয়স্ক এডিস মশার ঘনত্ব ২০৭টি। অথচ বর্ষার আগে তথা ৩ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত জরিপে সেই ঘনত্ব ছিলো ৩৬টি।

একইভাবে বেড়েছে এডিস মশার লার্ভার সংখ্যাও।

প্রাক-বর্ষা জরিপে দেখা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মশার ঘনত্ব ছিলো ২৬টি এবং উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২১টি। নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, দক্ষিণে এর ঘনত্ব ৭৯টি এবং উত্তরে ৫৭টি।

গবেষণায় অধিকাংশ এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে পরিত্যক্ত টায়ারে জমে থাকা পানিতে, প্লাস্টিকের ড্রামে, বালতি, খোলা ট্যাঙ্ক ও ফুলের টবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “বয়স্ক মশা ও এডিস মশার লার্ভার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। যদি বৃষ্টি না থামে এবং আর্দ্রতা না কমে তাহলে রোগীর সংখ্যা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

এ পরিস্থিতি যেনো আরো খারাপের দিকে না যায় তাই এটি মোকাবেলায় ব্যাপক ও বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের মত, মশার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার মানে হলো মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিগুলো একদিকে যেমন অপর্যাপ্ত অন্যদিকে তা অপর্যাপ্তও।

ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চের সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, “যদি মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত হতো তাহলে পরিস্থিতি এতো ভয়াবহ হতো না।”

বাংলাদেশে গতকাল (২৭ জুলাই) পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার ৫২৮ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬৮৩ জন নতুন ডেঙ্গু রোগীর খবর জানা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, এবছর এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ।

অধিদপ্তরের মতে ডেঙ্গু জ্বরে মৃতের সংখ্যা অন্তত আট। যদিও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এডিস মশার কামড়ে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সূত্র মতে, এই সংখ্যা আরো অনেক বাড়তে পারে। কেননা, ডেঙ্গু জ্বরের কারণে অনেক রোগীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হচ্ছে না।

এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশেই ভয়াবহ হয়নি, এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের হিসাবে, ডেঙ্গুর পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনামেও।

(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে Aedes Population: Six-fold rise in four months লিংকে ক্লিক করুন)

Comments

The Daily Star  | English

'No legal bar' to Babar's release after acquittal in another 10-truck arms case

He has now been cleared in both cases filed over the high-profile incident from 2004

1h ago