‘বই সাঁকো’-য় যুক্ত দুই বাংলা, পছন্দের বই মিলবে আরো সহজে
হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন কিংবা ইমদাদুল হক মিলনের লেখা বই পেতে আর অসুবিধা হবে না কলকাতার পাঠকদের। একইভাবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, কবি শঙ্খ ঘোষ, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় কিংবা সমরেশ মজুমদারের মূল বই পাওয়া যাবে না ঢাকায়। এই বইগুলো স্থানীয়ভাবে মুদ্রিত হবে এবং স্থানীয় মূল্যেই বিক্রি করা হবে। আর বইগুলো দুই বাংলার প্রায় সব জেলা, গ্রামেও মিলবে।
গত ২৩ জুলাই কলকাতায় একটি বইয়ের দোকানে বাংলাদেশের একটি প্রকাশনী সংস্থার বইয়ের কর্নার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা জানান।
কলকাতার ‘পত্রভারতী’ এবং বাংলাদেশের ‘অন্য প্রকাশ’- এই দুটি বেসরকারি বই প্রস্তুতকারী সংস্থার মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কলকাতার অন্যতম প্রধান প্রকাশনী হিসেবে এই প্রকাশনীর সব বই বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে প্রকাশ করতে পারবে ‘অন্য প্রকাশ’। আবার বাংলাদেশের জনপ্রিয় বইগুলো একইভাবে কলকাতায় প্রকাশ করবে ‘পত্রভারতী’।
শুধু তাই নয়, দুটি সংস্থা অতিরিক্ত আরো একটি তিন-পাক্ষিক চুক্তিতেও আবদ্ধ হয়েছে। দুটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত লেখকদের সঙ্গেও তারা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে জনপ্রিয় লেখকদের লেখা বই স্থানীয়ভাবে প্রকাশ এবং বিপণন করা হবে।
দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য জানান কলকাতার ‘পত্রভারতী’ প্রকাশনী সংস্থার কর্ণধার তথা কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কলকাতায় বাংলাদেশের লেখকদের লেখা বইয়ের চাহিদা বাড়ছে বলেই এই ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি এও দাবি করেন, কলকাতা বইমেলা কিংবা কলকাতায় বাংলাদেশি বইয়ের মেলাতেও হাজার হাজার পাঠক আসছেন। সেই পাঠকদের সারাবছর বাংলাদেশি বই পাওয়া নিশ্চিত করতেই এমন উদ্যোগ।
সেদিনের সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে ছিলেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের নিযুক্ত ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত। অন্য প্রকাশের কর্ণধার মাজাহারুল ইসলাম ছাড়াও আরো অনেকেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
তৌফিক হাসান বলেন, “এটা সত্যিই গর্বের যে কলকাতায় বাংলাদেশের বইয়ের বাজার তৈরি হয়েছে। এবং এভাবে বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের বইয়ের একটা ঠিকানাও তৈরি হলো।” তিনি এও বলেন, দুই বছর আগে একইভাবে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের আরো একটি বাংলাদেশি বইয়ের স্টল যাত্রা শুরু করেছে।
অন্য প্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম বলেন, “শুধু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য থেকে এমন উদ্যোগ নয়। বইয়ের মাধ্যমে দুই বাংলার মানুষের মধ্যে একটা সুসম্পর্ক তৈরি হোক সেটাই আমরা চেয়েছি। তাইতো এই পুরো কর্মসূচির নাম রাখা হয়েছে ‘বই সাঁকো’। বই হোক আমাদের দুই বাংলার মানুষর হৃদয়ের বন্ধনে সাঁকো।”
Comments