বিজেপিকে মোকাবিলায় তৃণমূলের দুই শাখা সংগঠন
দলের বিপর্যয় খুঁজতে প্রথমবারের মতো কোর কমিটির বৈঠক করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির প্রাণশক্তি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিরুদ্ধে তৃণমূলের ভাবধারায় একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটান মমতা। সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় হিন্দ বাহিনী’। একইভাবে নারীদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘বঙ্গজননী বাহিনী’। এই দুটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে যথাক্রমে নাট্যকার ও রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং সাংসদ ডাক্তার কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে নিযুক্ত করেছেন মমতা।
একইভাবে বেশ কিছু জেলায় সংগঠনের রদবদল ঘটিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
জানা গেছে, আগামী বছর রাজ্য জুড়ে প্রায় ১২৫টি পৌরসভা নির্বাচন এবং পরের বছর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এই দুটি নির্বাচনের আগেই দলের ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী।
তৃণমূল সূত্রের আরও খবর, তৃণমূলের এই বিপর্যয় খুঁজতে আরও গভীরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। কী কারণে মাত্র কয়েক বছরের (২০১৬ সালের বিপুল ভোটে বিধানসভা জয় লাভ করে তৃণমূল) জন সমর্থন হ্রাস পেয়েছে, সাংগঠনিক কাঠামোয় কোথায় ফাঁকফোকর আছে- সেগুলো জেলা স্তরের নেতৃত্বকে খুঁজে বের করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের দুটি শক্তিশালী অঞ্চল জঙ্গল মহল এবং পার্বত্য অঞ্চল দুটিতেই নজিরবিহীনভাবে শক্তি কমে গেছে। দুটি অঞ্চলে জয়ী হয়েছে বিজেপি এবং ভোটেরও ব্যবধানও অনেক। কিন্তু, তৃণমূল কংগ্রেস ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো বিধানসভা নির্বাচনের এই দুটি জায়গাতেই বিপুল জনসমর্থন পেয়েছিলো, এমন কি ২০১৬ সালেও সেই শক্তি অক্ষুণ্ণ ছিলো।
কিন্তু, মাত্র তিন বছরে এমন পরিণতি তৃণমূল নেত্রীকে চিন্তায় ফেলেছে বলে তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে আজ (৩১ মে) কালীঘাটের বাড়ি থেকে তৃণমূল নেত্রী কোর কমিটির বৈঠক শেষ করে কিছু না বললেও, দলের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই তৃণমূল নেত্রী জেলা স্তরের সাংগঠনিক কাজ শুরু করবেন।
অন্যদিকে, কোর কমিটির বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দেশটির নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
তিনি কোর কমিটি বৈঠকে এও বলেন যে, ইভিএম মেশিনের আগেই প্রোগ্রামিং করা ছিলো। কেননা ফল প্রকাশের আগেই বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন তিনশোর বেশি আসন পেতে যাচ্ছেন তারা। এই দাবি কী করে তারা করলেন, যদি তারা আগেই না জানতেন, কী ফলাফল হবে?
যদিও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Comments