আলোর ফেরিওয়ালা

ঢাকা কলেজের জীবনে আমাদের সবচেয়ে আনন্দের কী ছিলো? অবাধ স্বাধীনতা। নটরডেমের একটি ছেলে বা হলিক্রসের একটি মেয়ের কাছে যা ছিলো অকল্পনীয়। স্কুলের কড়া শাসন পার করেই আমরা পেয়ে গেলাম সীমাহীন স্বাধীনতা। ক্লাস করতে হয় না, পরীক্ষা দিতে হয় না। ইচ্ছে করলে কোনো ক্লাসে ঢোকা যায়, ইচ্ছে করলে মাঝপথে বের হয়ে যাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রনেতা এবং অস্ত্রধারী ক্যাডাররা দলে দলে ঢাকা কলেজে আসেন। ঢাকা কলেজ থেকে ছাত্ররা দলে দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। স্বৈরাচারবিরোধী মিছিল-মিটিংয়ে ব্যস্ততার শেষ নেই। কলেজের পড়া বা ক্লাস বহু দূরের চিন্তা। ঢাকা কলেজ, সেরা কলেজ, সেরা রেজাল্ট, মেধাবী ছাত্র, সেরা শিক্ষক, নিজেদের গর্বের শেষ নেই।
Bishwa Sahitya Kendra
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং পাবলো খালেদের তোলা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ছবি। কোলাজ: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ঢাকা কলেজের জীবনে আমাদের সবচেয়ে আনন্দের কী ছিলো? অবাধ স্বাধীনতা। নটরডেমের একটি ছেলে বা হলিক্রসের একটি মেয়ের কাছে যা ছিলো অকল্পনীয়। স্কুলের কড়া শাসন পার করেই আমরা পেয়ে গেলাম সীমাহীন স্বাধীনতা। ক্লাস করতে হয় না, পরীক্ষা দিতে হয় না। ইচ্ছে করলে কোনো ক্লাসে ঢোকা যায়, ইচ্ছে করলে মাঝপথে বের হয়ে যাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রনেতা এবং অস্ত্রধারী ক্যাডাররা দলে দলে ঢাকা কলেজে আসেন। ঢাকা কলেজ থেকে ছাত্ররা দলে দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। স্বৈরাচারবিরোধী মিছিল-মিটিংয়ে ব্যস্ততার শেষ নেই। কলেজের পড়া বা ক্লাস বহু দূরের চিন্তা। ঢাকা কলেজ, সেরা কলেজ, সেরা রেজাল্ট, মেধাবী ছাত্র, সেরা শিক্ষক, নিজেদের গর্বের শেষ নেই।

ঢাকার বিভিন্ন কলেজের ছেলেমেয়েরা দল বেধে ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে। ঢাকা কলেজের কোন শিক্ষকের নোট কতো ভালো, সেটিও ঢাকা শহরের আলোচনার একটি বিষয়।

এর মাঝে ঢাকা কলেজের তিনজন শিক্ষক আলাদা রকমের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠেন। একজন শামীম আজাদ। শাহাদত চৌধুরীর বিচিত্রা’র সেই সময়ের সারা জাগানো কর্মী। বিটিভিতেও তাকে দেখা যায়। গ্ল্যামারাস ম্যাডাম শামীম আজাদ। তাকে নিয়ে কতো জনের কতো রকমের গল্প। আরেকজন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। প্রখ্যাত কথাশিল্পী। ‘চিলে কোঠার সেপাই’র লেখক। যারা পড়েননি, তারাও নাম জানেন। এতোদিন যারা ছিলেন বহু দুরের মানুষ, তারা এখন চোখের সামনে।

এতো বড় লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে কলেজে ঢুকছেন, বের হয়ে যাচ্ছেন। তাকে সামনে থেকে দেখছি, কথা বলছি। রাজ্যের বিস্ময় চোখে দেখি, ভাবি। সে এক অন্য রকমের অনুভূতি, গর্ব। তৃতীয়জন ঢাকা কলেজের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শিক্ষক, ব্যক্তিত্ব বা তার চেয়েও বেশি কিছু অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। শিক্ষক হিসেবে তো বটেই, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

ক্লাস না করাটাই যে কলেজের প্রায় নিয়ম, সেই কলেজে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ক্লাসে উপচে পড়া ভিড়। ঢাকা কলেজের পরিচিত দৃশ্যের সঙ্গে যা একেবারেই বেমানান। কবে তার ক্লাস, তিনি আসবেন কী না, ক্লাসটি হবে কী না, ছাত্রদের গল্পের বিষয়। এই একটি মাত্র ক্লাস যে ক্লাসে পড়া পারার বা ধরার আতঙ্ক নেই। মুগ্ধ হয়ে কথা-গল্প শোনার সুযোগ আছে। যে গল্প ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি, আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা, তা যে শুধু কথার কথা নয়, তার প্রমাণ পেলাম ঢাকা কলেজে সায়ীদ স্যারের ক্লাসে। কথা যে একজন মানুষ কতো সুন্দর করে বলতে পারেন, সায়ীদ স্যারের কথা না শুনলে বোঝা সহজ ছিলো না। একজন শিক্ষক যে কতোটা তারকাখ্যাতি পেতে পারেন, মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জনপ্রিয়তম হয়ে উঠতে পারেন, তারও প্রথম এবং সর্বশেষ নাম সম্ভবত আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

প্রসঙ্গক্রমে একটি কথা এখানে বলে রাখতে চাই। পৃথিবীতে বক্তৃতা খুব আকর্ষণীয় বিষয়। একশ-দুইশো ডলার দিয়ে টিকেট কেটে মানুষ যাদের বক্তৃতা শোনেন, তাদের মধ্যে বিল ক্লিনটন, ড. ইউনূসসহ বেশ কিছু মানুষ রয়েছেন। একটি বক্তৃতার জন্যে তারা কয়েক হাজার ডলার পেয়ে থাকেন। তাদের অনেকের বক্তৃতা শোনার সুযোগ হয়েছে।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বাংলা-ইংরেজি দুটি ভাষা খুব ভালো জানেন। তার যেমন রবীন্দ্রনাথের বহু কিছু মুখস্থ, অনর্গল বলতে পারেন। তেমন শেক্সপিয়রও অনর্গল বলতে পারেন। বহু বক্তৃতা শোনার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সায়ীদ স্যার যদি বক্তৃতাটিকেও পেশাদারিত্বের সঙ্গে গ্রহণ করতেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে  পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার পাশাপাশি, ডলার আয়েরও সুযোগ ছিলো।

কথার আকর্ষণেই আমরা ছুটে এসেছিলাম বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।

জনপ্রিয়তম এই মানুষটি রক্ত-শ্রম-ঘামে গড়ে তুলেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। নিজের কথা না ভেবে, নিজের স্ত্রী-সন্তানের কথা না ভেবে, কাজ যে করা যায়, এমন একজন মানুষের নামও আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। যে মানুষটির বন্ধুরা দেশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা, যে মানুষটির ছাত্ররা দেশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা, যে বন্ধু বা ছাত্ররা ‘সায়ীদ আমার বন্ধু’ বা ‘সায়ীদ স্যার আমার শিক্ষক’ বলতে পারাটা জীবনের অন্যতম গর্বের ব্যাপার মনে করেন, সেই মানুষটি কোনোদিন কারো থেকে নিজের জন্যে কোনো সুবিধা নেননি।

ব্যক্তি সায়ীদ স্যারের জীবন যে কতো সাধারণ হতে পারে, না দেখলে বা না জানলে বিশ্বাস করা সম্ভব ছিলো না। সায়ীদ স্যারের একটি গাড়ি ছিলো। নিজে চালাতেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কাজের সূত্রে সেই গাড়িতে বহুবার ওঠার সুযোগ হয়েছে। স্যার গাড়ি চালিয়ে এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে যাচ্ছেন। আমরা সঙ্গী। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়েছে। খাওয়া নেই। স্যারের বাসায় এসে একজনের ভাত দুই-তিন জনে খেয়েছি। কোনো কোনো দিন স্যারকে কিছু খেতে দেখিনি। সেই গাড়িটি মাঝেমধ্যেই বিগড়ে যেতো। ঠেলে স্টার্ট দেওয়ার কাজও করতে হয়েছে।

দুই দরজার ছোট গাড়িটি চালিয়ে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ঢাকা কলেজে ঢুকতেন। সেই সময়, সেই সময়ের সবচেয়ে দামি গাড়ি নিয়ে কলেজে আসতেন কোনো কোনো শিক্ষক। কিন্তু, ছাত্রদের সকল আকর্ষণ থাকত ছোট্ট ঐ গাড়িটির দিকে, কোনো দামি গাড়ির দিকে নয়। সায়ীদ স্যারের পক্ষে তখন ইচ্ছে করলেই সবচেয়ে দামি গাড়ি বা বাড়ির মালিক হওয়া কঠিন ছিলো না, সেটি তখনকার চেয়ে এখন আরো ভালোভাবে বুঝতে পারি। আরো ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারি, মূল্য গাড়ির নয়, অর্থ-গাড়ি-বাড়ি আসলেই তুচ্ছ। মূল্যহীন মানুষ গাড়ি বা পোশাক দিয়ে নিজেকে মূল্যবান দেখাতে চান। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ নিজে মূল্যবান, গাড়ি-বাড়ি-অর্থ তার কাছে অতি তুচ্ছ।

খুব কম সংখ্যক মানুষ তা বুঝতে পারেন, এমন সাধারণ জীবনযাপন করতে পারেন। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সেই জীবনযাপনই করে যাচ্ছেন পুরোটা জীবন। তিনি সব সময় ‘আমরা’। তার জীবনে ‘আমি’ বলে কিছু নেই। কলেজ শিক্ষকতার বেতনের অর্থ দিয়ে শুধু স্ত্রী-সন্তানের কথা ভাবেননি। ষাটের দশকের একদল লেখককে সঙ্গী করে জীবন কাটিয়েছেন।

‘আমি’ নই ‘আমরা’-এই বোধ হয়ত জন্মগতভাবেই তার ভেতরে ছিলো। তবে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পরা এবং অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার ঘটনাটি তাকে আমূল বদলে দেয়। পাকিস্তানি মেজর চিনেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে, টেলিভিশনের কল্যাণে। তখন তিনি টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপস্থাপক। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসার পরের উপলব্ধির কথা বলছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ‘ঘটনাটা আমার জীবনকে পুরো বদলে দিয়েছিলো। এরপর থেকে আমার সব সময় মনে হয়েছে, আমি বেঁচে নেই। এখন থাকে আমার জীবন আমার নয়, অন্যদের জন্যে। তারপর থেকে আর আমার নিজের কথা ভাবিইনি। আজও ভাবি না। আমি নিজের জন্য চাই, আমার জন্য চাই- এই ভাবনা থেকে সেদিনের পর থেকে একবারেই সরে এলাম।’

তিনি বিত্তবান মানুষদের দ্বারে দ্বারে গেছেন। যেসব মানুষ সায়ীদ স্যারকে সামনে থেকে দেখাটিকে জীবনের সৌভাগ্যতম ঘটনা মনে করেছেন, তাদের কাছে তিনি নিজে গেছেন। অর্থ সংগ্রহ করেছেন। পুরোটাই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের জন্যে, নিজের জন্যে নয়। সামান্য অংশও নিজের জন্যে নয়। বহু বছর ধরে দেখছি, অনেকেই একথা বিশ্বাস করতে চান না। এখনও অনেকে বিশ্বাস করেন না, ‘নিশ্চয়ই কিছু তো নিজের জন্যে রেখেছেন’- এমন দৃঢ় বিশ্বাস তাদের মনে।

অর্থনৈতিক সততা আমাদের মতো এই গরিব-দুখী মানুষের দেশে এমন এক অদৃশ্য বস্তু, যার দেখা মেলে না। সেই দেশে একজন মানুষ এতোটা জনপ্রিয়, এক অর্থে ক্ষমতাবানও। নিজের জন্যে শিক্ষকতার চাকরির বাইরে আর কোনো অর্থ আয় করছেন না- এটা বিশ্বাস করা কঠিন নয়, অসম্ভব। একটি ঘটনা বলি।

সায়ীদ স্যার কোনো এক ছাত্রের কল্যাণে, সকল নিয়ম মেনে উত্তরায় লেকের ধারে একটি সরকারি প্লট পেয়েছিলেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছোট্ট একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি বানিয়েছিলেন। সেই বাড়িতে আমরা সারারাত জেগে নাইট কুইন ফুল ফোটা দেখেছিলাম। এমন চমৎকার বাড়িটি নিজের করে রাখতে পারেননি।

চাকরির বেতন দিয়ে সংসার এবং ঋণের কিস্তি শোধ করা সম্ভব ছিলো না। বাড়ি বিক্রি করে ঋণ শোধ করেছিলেন। এসব ঘটনা হয়ত এক সময় ‘মিথ’-এর মর্যাদা পাবে। কেউ বিশ্বাস করবেন, কেউ হয়ত বিশ্বাস করবেন না। কাউকে বিশ্বাস করতেও বলছি না। শুধু বলছি, এসব গল্প আমরা শুনিনি। এই সত্যগুলো আমরা চোখের সামনে দেখেছি-জেনেছি-বুঝেছি।

আমাদের কৈশোরের সেই লাল ইটের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তন। নিয়ম করে প্রতি শুক্রবার কথা বলেছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। সক্রেটিস থেকে কবি-রোহিনী কতো চরিত্র, কতো তর্ক। শিখতে নিশ্চয়ই খুব বেশি কিছু পারিনি। বিশেষ করে সায়ীদ স্যারের মতো সহজ-সরল বৈষয়িক চাহিদাহীন জীবনযাপন করা শিখতে পারিনি। আমরা গ্রাম থেকে এসেছিলাম। বই বলতে ‘মাসুদ রানা’ বুঝতাম।

মানুষ একজীবনে তো সবকিছু পড়ে ফেলতে পারেন না। খুব সামান্যই পড়তে পারেন। সায়ীদ স্যার আমাদের বাছাই করা কিছু ভালো বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে না আসলেও হয়ত কিছু বই পড়তাম। বিশ্বসাহিত্যের সেরা বই, বাছাই করা বই সম্ভবত পড়তাম না। এই বাছাই করে পড়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার চেয়ে হয়ত বেশি তাৎপর্যপূর্ণ সেই বইগুলো সম্পর্কে স্যারের আলোচনা-ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ।

এমন কিছু বই পড়ার সুযোগে চিন্তাজগতে হয়ত একটি পরিবর্তন এসেছে। জানি কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু, ভেতরে তাগাদা অনুভব করি। যা কিছু করবো, একটু ভালো করে করতে হবে, ভালো করে করার চেষ্টাটা থাকতে হবে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে সবাইকে কবি-সাহিত্যিক হওয়ার স্বপ্ন সায়ীদ স্যার দেখাননি। একটু ভালো মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। দারোগা হলেও যেনো ভালো দারোগা হন, সেই স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

তিনি এমন একজন মানুষ, গভীর অন্ধকারে দাঁড়িয়েও আলো দেখেন। মানুষের উপর থেকে কখনো আশা হারান না। সাধারণজন দেখেন চারদিকে দুঃখ-দুর্দশা-হতাশা, অবক্ষয়, কিছুই হলো না-হবে না। দুঃখের সাগরে নিজে নিমজ্জিত হন, অন্যকে নিমজ্জিত করেন। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ দেখেন, ‘কতো লোক খারাপ হলো, কতো লোক নষ্ট হলো, তাতে কিছু যায় আসে না। কয়টা লোক এই দুঃখ তাড়ানোর জন্যে শপথ নিলেন, সেটা হলো ঘটনা-সেটাই বিবেচ্য বিষয়।’

সায়ীদ স্যার স্বপ্নবান মানুষ। নতুন নতুন ধারণা নিয়ে নিরন্তর ছুটে চলা মানুষ।

চল্লিশ বছরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, আলোকিত-বিকশিত মানুষ তৈরির কারিগর সায়ীদ স্যার। তরুণ শিক্ষক হিসেবে যা শুরু করেছিলেন, চিরতরুণ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আজও নিরবিচ্ছিন্নভাবে তা করার চেষ্টা করছেন। পেরেছেন তো বটেই। কতোটা পেরেছেন, সেই তর্ক অনাবশ্যক। চূড়ান্ত অবক্ষয়ের সময়কালে একজন মানুষ তরুণ শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে চেয়েছিলেন। নিজের জীবনের সবটুকু দিয়ে সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এমন একজন মানুষ, যিনি ইস্পাতসম কঠিন বিশ্বাসের জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে পারেন, ‘চারপাশে অন্ধকার বিশাল কিন্তু আমি একটি ছোট্ট মাটির প্রদীপের ওপরই ভরসা রাখি। মানুষ কোথায় যাবে সেটা অন্ধকার দ্বারা নির্ধারিত হয় না, আলোর দ্বারা নির্ধারিত হয়।’

s.mortoza@gmail.com

Comments

The Daily Star  | English
classes resume in Dhaka University

Classes resume in DU after over 3 months

Classes and exams began around 10:00am, with students from dormitories and off-campus locations returning to participate

1h ago