ভারতের একমাত্র গরু দপ্তরের মন্ত্রীর গো-হার
গো-হত্যা রুখতে ভারতে বিজেপির প্রচার প্রচারণার কমতি নেই। কেন্দ্রের এই উদ্যোগে উৎসাহী হয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া তথা ‘রাজমাতা’ তার রাজ্যে গো-মাতা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটা পৃথক মন্ত্রণালয় খুলে পূর্ণমন্ত্রী করে দেন একজন বিজেপি নেতাকে।
ভারতের প্রথম গো-পালন মন্ত্রী হিসাবে সেই থেকেই আলোচনায় ছিলেন এই ওটারাম দেওয়াসি। সেই ওটারাম এবারও ফের আলোচনায়। তবে সেই আলোচনার কারণ, সদ্য বিধানসভা ফলাফলে গো-হার হেরেছেন তিনি।
আর তা নিয়ে ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো সরগরম হয়েছে দিনভর। শুধু ফেসবুক, টুইটার নয়, গো-পালনমন্ত্রীর এহেন গো-হারের খবর শিরোনাম করেছে দেশটির বড়-বড় সংবাদমাধ্যমগুলো।
প্রায় প্রত্যেক সংবাদ মাধ্যেমের ডিজিটাল ভার্সনের খবরের শিরোনাম প্রায় এক, ‘রাজস্থানের গরু মন্ত্রীর গো-হার’।
এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক, গো-হার বলা হচ্ছে কেন। গো-পালন মন্ত্রী ছিলেন বলেই কি তার ভাগ্যে এমন বিশেষণ। না একদম নয়, বাস্তবিক অর্থের ভোট পাওয়ার নিরিখে তার হারকে আক্ষরিক অর্থে গো-হার বলা হচ্ছে।
কেননা একজন মন্ত্রী যখন ভোটে দাঁড়ান তখন ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী হিসাবে গণ্য করা হয় তাকে। আর সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে যে দাঁড়াবেন তাকেও হতে হয় রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা আর্থিকভাবে শক্তিশালী, বলিয়ান।
রাজস্থানের সিরোহি আসনের প্রার্থী ছিলেন গো-পালন মন্ত্রী ওটারাম দেওয়াসি। তার বিরুদ্ধে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়েছেন সেখানে। তার নাম সন্যাম লোধার। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে এক-দুই হাজার ভোটের নয়, এক্কেবারে ১০ হাজার ভোটের বেশি ব্যবধানের হেরেছেন গো-মন্ত্রী। ওরটারাম মোট ভোট পেয়েছিলেন ৭১ হাজার ১৯টি। আর তার বিরুদ্ধে অনামী, সাধারণ একজন প্রার্থী সন্যাম লোধা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ৮১ হাজার ২৭২ ভোট।
যদিও সন্যাম লোধা এক সময় (২০১৩ সালে) কংগ্রেসের নেতা ছিলেন। দু-বার ওই কেন্দ্রে জিতেও ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস থেকে এবার তাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাই বিক্ষুব্ধ হয়ে নিজেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ভারতের প্রথম গরু বিষয়ক মন্ত্রী ওটারাম দেওয়াসির বিরুদ্ধে।
রাজস্থানে অবশ্য ওটারামের মতো আরও ২০ জন মন্ত্রী হেরেছেন। কিন্তু সেই হারের ব্যবধানে ওটারাম সবাইকে ছাপিয়ে শীর্ষে পৌঁছে গা-হারের রেকর্ড অর্জন করেছেন।
গো-মন্ত্রীর গো-হারার খবর সে কারণে ভারতের এখন ভাইরাল ইস্যু।
Comments