নিজ দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করলেন ট্রাম্প-বাইডেন

নভেম্বরে আবারও লড়বেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
নভেম্বরে আবারও লড়বেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাওয়া নিশ্চিত করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

মঙ্গলবার উভয় দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের ফলে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দলীয় সমর্থন আদায় করেছেন ট্রাম্প-বাইডেন।

মঙ্গলবার চার অঙ্গরাজ্য, এক মার্কিন অঞ্চল ও বিদেশে বসবাসরত ডেমোক্র্যাটদের প্রাইমারি নির্বাচন শেষ হয়েছে।

এই ভোটের ফলে বাইডেনের মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে। আগামী গ্রীষ্মে দলের এক আনুষ্ঠানিক সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হবে।

হ্যাম্পশায়ারে নির্বাচনী প্রচারণায় জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
হ্যাম্পশায়ারে নির্বাচনী প্রচারণায় জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাইডেন (৮১) বলেন, ভোটাররা তাকে আবারও তার ওপর ভরসা রাখায় তিনি 'সম্মানিত' হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, 'তার মনোনয়ন এমন সময়য় এসেছে যখন ট্রাম্প অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।'

সাম্প্রতিক ইতিবাচক অর্থনৈতিক ধারার কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে দাঁড়াচ্ছে', কিন্তু আগামীতে দেশটির গণতন্ত্রের প্রতি হুমকির মোকাবিলা করতে হবে। তিনি রিপাবলিকানদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, 'যারা গর্ভপাতকে নিষিদ্ধ করার ও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, তাদের থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।'

বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়নের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। তার বিরুদ্ধে দলের অভ্যন্তরে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না বললেই চলে।

ভোটাররা বাইডেনের বয়স ও দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও দলের নেতা-কর্মীরা তার ওপরই আস্থা রেখেছেন।

অপরদিকে, শুধু নেতা-কর্মী নয়, ভোটারদের কাছেও অসম্ভব জনপ্রিয় রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প (৭৭)। তার বিরুদ্ধে বড় আকারের নির্বাচনী তহবিলে নিয়ে এসেও একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বী ধরাশায়ী হয়েছেন।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা মূলত কঠোর অভিবাসন আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতিকে ঘিরে এগিয়েছে। তিনি নির্বাচিত হলে 'সীমান্তে তালা লাগিয়ে দেওয়া' ও 'রেকর্ড পরিমাণ অবৈধ অভিবাসীকে তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার' অঙ্গীকার করেছেন।

জর্জিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
জর্জিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

ট্রাম্পের অন্যান্য অঙ্গীকারের মধ্যে আছে অপরাধের মাত্রা কমিয়ে আনা, জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানো, বিদেশি আমদানির ওপর কর আরোপ করা ও ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে পররাষ্ট্রনীতিতে 'আমেরিকা ফার্স্ট (সবার আগে যুক্তরাষ্ট্র)' দৃষ্টিভঙ্গি চালু।

মঙ্গলবারের এই ফলে বিস্ময়ের কিছুই ছিল না। উভয় প্রার্থী এখন পর্যন্ত নির্বাচনী দৌড়ে আধিপত্য স্থাপন করে এসেছেন।

মতামত জরিপে জানা গেছে বেশিরভাগ মার্কিন জনগণ উভয় প্রার্থীর কাউকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে তেমন আগ্রহী নন। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প-বাইডেনের মনোনয়ন পাওয়াকেই স্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা।

ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান প্রাইমারির নিয়ম কিছুটা ভিন্ন হলেও পুরো প্রক্রিয়া মোটামুটি একই।

প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে দলের কিছু প্রতিনিধি থাকেন, যারা প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেন। এই প্রতিনিধিদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি।

রিপাবলিকান প্রার্থীকে অন্তত এক হাজার ২১৫ জন দলীয় প্রতিনিধির সমর্থন ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে এক হাজার ৯৬৮ জনের সমর্থন আদায় করতে হয়।

মঙ্গলবার রিপাবলিকানরা মিসিসিপি, জর্জিয়া ও ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে প্রাইমারি ও হাওয়াই দ্বীপে ককাসের আয়োজন করে।

ডেমোক্র্যাটরা জর্জিয়া, ওয়াশিংটন ও মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে, উত্তর মারিয়ানা দ্বীপে (মার্কিন ভূখণ্ড) ও বিদেশে বসবাসরত নেতা-কর্মীদের জন্য প্রাইমারির আয়োজন করে।

এসব নির্বাচনের ফল থেকে জানা যায়, উভয় প্রার্থী প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন আদায় করেছেন।

মঙ্গলবারের আগেই বাইডেন ও ট্রাম্পের মূল প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচনী দৌড় থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সর্বশেষ এই প্রাইমারিতে দুই নেতার জয়লাভ ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।

সুপার টিউসডেতে ১৪ অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের কাছে হেরে যাওয়ার পর সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি নিজের নাম প্রত্যাহার করেন।

আরও বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে প্রাইমারি নির্বাচন বাকি থাকলেও বাইডেন ও ট্রাম্প ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন পেয়ে গেছেন। যার ফলে, নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, পরিস্থিতিতে বড় কোনো পরিবর্তন না এলে ২০২৪ এর নির্বাচনে বাইডেন-ট্রাম্প রিম্যাচ হতে যাচ্ছে

৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Penalty less than illegal gains fuels stock manipulation

While fines are intended to deter future offences, questions remain over their effectiveness if the amount is lower than the illegal gain.

12h ago