রাশিয়ার বেলগোরোদে হামলায় সম্পৃক্ততা নাকচ যুক্তরাষ্ট্রের

বেলগোরোদে হামলার পর পরিত্যক্ত সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স
বেলগোরোদে হামলার পর পরিত্যক্ত সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এ হামলার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়।

আজ বুধবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার বেলগোরোদের হামলাটি ছিল ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর সবচেয়ে বড় আন্তঃসীমান্ত হামলাগুলোর মধ্য অন্যতম।

তবে রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন থেকে আসা সশস্ত্র 'বিদ্রোহীদের' হামলা প্রতিহত করা হয়েছে।

রাশিয়া পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত হামভিসহ অন্যান্য ফেলে যাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত সামরিক পরিবহনের কিছু ছবি প্রকাশ করে।

এ ছবির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা 'রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলাকে' অনুমোদন বা উৎসাহ দেয়নি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার স্বীকার করেন, 'সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য মাধ্যম' থেকে জানা গেছে, এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তিনি জানান, তার দেশ 'এসব তথ্যের সত্যতা' নিয়ে সন্দিহান।

ম্যাথু মিলার মঙ্গলবারের সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, '(রাশিয়ার বিরুদ্ধে) কীভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করবে, তা ইউক্রেনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'

কামানের গোলার হামলার পর বেলগোরোদের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

রাশিয়া জানিয়েছে, ৭০ জন হামলাকারী নিহত হয়েছেন এবং এই যোদ্ধারা ইউক্রেনের নাগরিক।

কিয়েভ এ হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাদের মতে, রাশিয়ার দুটি পুতিন-বিরোধী আধাসামরিক বাহিনী এই অভিযানের জন্য দায়ী।

বেলগোরোদের গভর্নর ভিয়াচেসলাভ গ্লাদকভ জানান, অন্তত ১ জন বেসামরিক ব্যক্তি সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি আবারও জানান, নতুন করে ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে বেলগোরোদ। ড্রোন থেকে নিক্ষিপ্ত বিস্ফোরকে একটি গাড়ির ক্ষতি হয়েছে।

তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি নিয়ে তারা ২ পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

বেলগোরোদের সহিংসতার নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, 'ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদী সংগঠনের একটি ইউনিট' তাদের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়া জানিয়েছে, কামান ও বিমান হামলার মাধ্যমে তারা ইউক্রেনীয়দের হামলা প্রতিহত করেছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া লিজিওন ও রাশিয়ান ভলান্টিয়ার কর্পস (আরভিসি) নামে দুটি রুশ সংগঠন এ হামলার জন্য দায়ী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দুই আধাসামরিক বাহিনীর পোস্টে তাদের হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্লেষকরা।

উভয় সংগঠন ইউক্রেনের গণমাধ্যম সাসপিলনেকে জানায়, তারা 'রুশ ফেডারেশনের সীমান্তে একটি সেনাবাহিনীমুক্ত এলাকা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যাতে তারা (রুশরা) সরাসরি ইউক্রেনে কামান হামলা চালাতে না পারে।'

রুশ ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা হলে তা পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবহার করা হবে না—এ শর্তেই কিয়েভকে দূর পাল্লার অস্ত্র দিয়েছে পশ্চিমা মিত্ররা। সাম্প্রতিক সময়ের এ হামলায় সে রকম কোনো অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, কিয়েভ আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করলেও, ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর সহায়তা ছাড়া এ ধরনের হামলা পরিচালনা করা সম্ভব না।

 

Comments

The Daily Star  | English
CSA to be repealed

CSA to be repealed within a week: Nahid Islam

About the election, Nahid said an election based on national consensus will be held after completing all necessary reforms.

3h ago