কৌশলগত খেরসনে হতে পারে ‘সবচেয়ে তীব্র লড়াই’: ইউক্রেন
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খেরসন অঞ্চল কৌশলগত দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত রাশিয়ার দখলে থাকা এ অঞ্চল থেকে ইতোমধ্যে বেসামরিক ব্যক্তিদের সরিয়ে নিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ক্রেমলিন তাদের দখলে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরটির প্রতিরক্ষায় 'সবচেয়ে তীব্র' লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে এ অঞ্চলে থাকা রুশ বাহিনী কিছুটা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এ মুহূর্তে তারা নিপ্রো নদীর পশ্চিম উপকূলে আটকে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। উল্লেখ্য, ৮ মাস আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই খেরসনের প্রাদেশিক রাজধানী শহর 'খেরসন' ক্রেমলিনের দখলে আছে।
খেরসনে নিযুক্ত রুশ কর্তৃপক্ষ শহরের বাসিন্দাদের পূর্ব উপকূলে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্তোভিচ জানান, বেসামরিক ব্যক্তিরা সরে গেলেও রুশ বাহিনী শহর ছেড়ে যাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
আরেস্তোভিচ মঙ্গলবার এক অনলাইন ভিডিও বার্তায় বলেন, 'খেরসনের বিষয়ে সব কিছুই পরিষ্কার। রুশরা তাদের রসদ পরিপূরণ করছে এবং সেখানে তাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করছে।'
'অর্থাৎ, কেউ হাল ছেড়ে দিচ্ছে না। বরং, সবচেয়ে তীব্র লড়াইগুলো খেরসনে হতে যাচ্ছে', যোগ করেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের যে ৪টি প্রদেশকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, তার মধ্যে কৌশলগত দিক দিয়ে খেরসন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলের মাধ্যমে ক্রিমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী একমাত্র সড়ক ও ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ নদী নিপ্রোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে রাশিয়া।
খেরসনের পশ্চিমে মিকোলাইভ অঞ্চলে মঙ্গলবার সারাদিন ধরে কামান মহড়া চলেছে বলে জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামের রুশপন্থী চ্যানেল রাইবার।
রাইবারের পোস্টে আরও জানানো হয়, খেরসনের উত্তরে ইশচেনকা অঞ্চলে ইউক্রেনের বাহিনী তাদের অবস্থান সুসংহত করার চেষ্টা চালালেও তাদেরকে আগের অবস্থানে পিছু হটতে বাধ্য করেছে রাশিয়া। তারা আরও জানায়, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী আবারও জোর আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ আছে এবং খাবার ও পানির সংকট চলছে। ফলে অসংখ্য বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
সেপ্টেম্বরে রুশ বাহিনী কিয়েভের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে হার মানার পর পুতিন যুদ্ধের কলেবর বাড়িয়েছেন। তিনি লাখো রিজার্ভ সেনা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেন এবং ৪টি অঞ্চলকে গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা দেন। এছাড়াও, তিনি প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারেরও হুমকি দেন।
Comments