নির্বাচন দিতে চার বছর লাগতে পারে: সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা
সিরিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চার বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্রোহীদের প্রধান ও দেশটির নতুন নেতা আহমেদ আল-শারা। বাশার আল-আসাদের মিত্র ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে তার সরকার সম্পর্ক ধরে রাখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার আল-আরাবিয়া টিভির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ছদ্মনাম আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি হিসেবে পরিচিত হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) প্রধান শারা গতকাল আল-আরাবিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমাদের নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে, যা দুই থেকে তিন বছর সময় নিতে পারে।'
'এরপর নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ হতে চার বছরের মতো লাগতে পারে,' যোগ করেন তিনি।
ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো এ সাক্ষাৎকারে সিরিয়া-সংশ্লিষ্ট অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শারা।
তার গোষ্ঠী তুরস্কের সমর্থনপুষ্ট হলেও আঙ্কারার বিরোধিতার মুখে থাকা কুর্দি বিদ্রোহীদের ব্যাপারে নমনীয় হওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কুর্দিদের স্থানীয় বাহিনীকে জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
সিরিয়ার উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অংশে একটি বড় ভূখণ্ড কুর্দি বিদ্রোহের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাদের যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) ২০১৯ সালে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল।
সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান শারা।
জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের উদ্দেশে শারা বলেন, 'আসাদ সরকারের অপরাধের কারণে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এসব নিষেধাজ্ঞা স্বয়ংক্রিয়ভাবে উঠে যাওয়া উচিত।'
'রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে'
ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদের সবচেয়ে বড় মিত্র ছিল ইরান ও রাশিয়া। তার পতনে এ অঞ্চলে এই দুই দেশ, বিশেষ করে ইরান সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসাদ নিজে পালিয়ে মস্কোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
তবে সাক্ষাৎকারে ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন শারা।
তিনি বলেন, 'এ অঞ্চলে ইরানের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে চলতে পারবে না সিরিয়া। তবে এই সম্পর্ক উভয় দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান রেখে হতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো যাবে না।'
রাশিয়া প্রসঙ্গে শারা বলেন, 'রাশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। শক্তিমত্তায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে বিবেচিত।'
'সিরিয়ার সব অস্ত্রই রাশিয়ায় উৎপাদিত। দেশের অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র রুশ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত। অনেকে যেভাবে চাচ্ছে, সেভাবে রাশিয়ার প্রস্থান চাই না আমরা,' যোগ করেন তিনি।
Comments