ন্যাটোর ১২ দিনের মহড়া শুরু আজ, থাকবে ২৫০ যুদ্ধবিমান
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আকাশ মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে।
আজ সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জোটের সব সদস্য ও সহযোগীকে আশ্বস্ত করতে ও সম্ভাব্য রুশ হুমকির বিরুদ্ধে শক্তি দেখাতে এই মহড়া শুরু হতে যাচ্ছে।
জার্মানির নেতৃত্বে 'এয়ার ডিফেন্ডার ২৩' নামের এই মহড়া আজ ১২ জুন থেকে শুরু হয়ে ২৩ জুন পর্যন্ত চলবে। এতে ন্যাটোর ২৫ সদস্য রাষ্ট্র, জোটের সহযোগী জাপান ও জোটে যোগদানে ইচ্ছুক সুইডেনের মোট ২৫০টি সামরিক উড়োজাহাজ অংশ নেবে।
এই মহড়ার আরেক উদ্দেশ্য ন্যাটোর আওতাধীন শহর, বিমানবন্দর ও নৌবন্দরে সম্ভাব্য ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা যাচাই ও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো। এই মহড়ায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ অংশ নেবেন।
গত সপ্তাহে জার্মান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনগো গেরহার্তজ এই মহড়ার বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নেওয়ার পর প্রতিক্রিয়া হিসেবে 'এয়ার ডিফেন্ডার' মহড়ার বিষয়ে প্রথম আলোচনা হয়। তবে এই মহড়ায় 'কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু নেই', বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, ন্যাটো তার ভূখণ্ডের 'প্রতিটি সেন্টিমিটারের' প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করবে। তবে এ মহড়ায় 'কালিনিনগ্রাদের (ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্ত) দিকে কোনো উড়োজাহাজ পাঠানো হবে না।'
'আমরা প্রতিরক্ষামূলক জোট। এই মহড়ার পরিকল্পনা সেভাবেই সাজানো হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
জার্মানিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এমি গুটমান গণমাধ্যমকে জানান, মহড়ায় ন্যাটো জোটের সম্মিলিত বাহিনীর উপযোগিতা ও দ্রুত গতিতে প্রতিক্রিয়া দেখানোর সক্ষমতা সম্পর্কে সবার সন্দেহ দূর করবে।
তিনি আরও জানান, মহড়ার উদ্দেশ্য রাশিয়াসহ অন্য দেশকে বিশেষ বার্তা দেওয়া।
'আমি খুবই অবাক হব যদি সব বিশ্ব নেতা এই মহড়ার মাধ্যমে জোটের একাত্মবোধের বিষয়ে সঠিক ধারণা না পান। একাত্মবোধ মানেই শক্তিমত্তা,' যোগ করেন তিনি।
নেতাদের মধ্যে আলাদা করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামও উল্লেখ করেন গুটমান।
দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করা ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ন্যাটোর সদস্যপদ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে।
ন্যাটোর নীতিমালার ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যেকোনো সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলাকে সব সদস্যের বিরুদ্ধে হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এই মহড়া জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া ও লাটভিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে।
গত শুক্রবার জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ জার্মানির উত্তরে শ্লেসভিগ-জাগেল বিমানঘাঁটিতে পাইলটদের সঙ্গে দেখা করবেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত গুটমান জানান, 'এয়ার ডিফেন্ডার'কে নিয়মিত মহড়ায় রূপান্তরের আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে 'এটাই শেষ মহড়া নয়,' বলেও জানান তিনি।
জার্মান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল গেরহার্তজ জানান, এই মহড়ায় বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তবে জার্মান কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সতর্ক করে বলেছে, মহড়ার কারণে ফ্লাইটের সময়সীমা পরিবর্তন হতে পারে।
Comments