সংকটকালেও বিশ্বে অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে এবং একই সঙ্গে সরবরাহ সংকটও বেড়েছে। ছবি: এএফপি
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে এবং একই সঙ্গে সরবরাহ সংকটও বেড়েছে। ছবি: এএফপি

বিশ্বব্যাপী অস্ত্রের বেচা-কেনার একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এ বছরও বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে সাপ্লাই চেইন বিঘ্নিত হয়ে সরবরাহ সংকট দেখা দেওয়ার পরেও এই প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

আজ সোমবার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (এসআইপিআরআই) বার্ষিক প্রতিবেদন মতে, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্ত্র ও সামরিক সেবা বিক্রির পরিমাণ ২০২১ এ ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৫৯২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

২০১৯-২০২০ সালে এই প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা ৭ বছর ধরে বৈশ্বিক অস্ত্র বিক্রি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এসআইপিআরআই।

আজ সোমবার 'অস্ত্র খাতের ডাটাবেস' নামের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

এসআইপিআরআই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সাপ্লাই চেনের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে ২০২১ সালে অস্ত্রের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং আগামী বছরগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

প্রতিবেদনে আলাদা করে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এই সংঘাতের কারণে সারা বিশ্বের অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য সরবরাহ সংক্রান্ত ঝামেলায় পড়েছে।

প্রতিবেদন মতে, পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য অস্ত্র উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের 'উল্লেখযোগ্য সরবরাহকারী' ছিল রাশিয়া।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনীকে বলিষ্ঠ করার উদ্যোগ ও বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের গোলাবারুদ ও অন্যান্য উপকরণ ইউক্রেনে পাঠানোর পর নিজেদের মজুদ পরিপূরণ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।'

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া অস্ত্রের উৎপাদন বাড়িয়েছে। তবে তারাও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সেমিকনডাক্টর চিপ পাচ্ছে না, যা আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল।

দনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের বাহিনীর সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স
দনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের বাহিনীর সাঁজোয়া যান। ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদনের ১০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪০টিই মার্কিন মালিকানাধীন। ২০২১ সালে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৯৯ বিলিয়ন ডলার।

২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত শীর্ষের ৫টি স্থান দখল করে আছে যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন, রেথিওন টেকনোলজিস, বোয়িং, নরথ্রপ গ্রুমমান ও জেনারেল ডায়নামিকস।

তবে এবারের প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য বিষয় হল চীন-ভিত্তিক ৮টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১০৯ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির তথ্য, যেটি এক বছর আগের তুলনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। মোট ৪টি চীনা প্রতিষ্ঠান শীর্ষ ১০ এ স্থান পেয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ৪টি প্রতিষ্ঠান আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি বিক্রি করেছে। তাদের মোট আয় ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

শীর্ষ ১০০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা ৬টি রুশ প্রতিষ্ঠান মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছে। তাদের মোট আয়ের পরিমাণ ১৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়য়, 'রুশ অস্ত্র শিল্পে বড় আকারে স্থবিরতা দেখা দেওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে।'

এসআইপিআরআই এর অস্ত্র শিল্প ডাটাবেসটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়য়।

বর্তমান প্রতিবেদনে ২০০২ সাল থেকে শুরু করে ২০২১ পর্যন্ত তথ্য আছে। ২০১৫ সাল থেকে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

ICT investigators submit 'genocide' case report against Hasina, ex-ministers

The charges stem from the violent crackdown during the July 2024 mass uprising

8m ago