যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের পদত্যাগ

লিজ ট্রাস। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পদত্যাগের কথা জানান। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর তার সরকারের গৃহীত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে কনজারভেটিভ দলের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হওয়ায় দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৬ সপ্তাহ পর লিজ ট্রাস এ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন।

এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূরণ করতে পারেননি। ইতোমধ্যে দলের প্রতি বিশ্বাসও হারিয়েছেন তিনি।

লিজ ট্রাস আরও বলেন, 'আমি স্বীকার করছি এ পরিস্থিতিতে আমি কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে পারি না। তাই আমি রাজা চার্লসের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাকে জানিয়েছি যে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে আমি পদত্যাগ করছি।'

পদত্যাগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেন লিজ ট্রাস।

এর আগে ১৮২৭ সালে মারা যাওয়ার আগে সর্বনিম্ন ১১৯ দিন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন জর্জ ক্যানিং।

অনেক আশা-ভরসা নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদে এসেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। তবে মাস দেড়েক যেতে না যেতেই চরম নড়বড়ে অবস্থায় চলে আসে তার 'রাজত্ব'। গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান পদত্যাগ করায় ট্রাসের প্রধানমন্ত্রীত্ব 'তাসের ঘরের' মতো উড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এর আগে, অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেংকে মাত্র ৩৮ দিনের মাথায় বরখাস্ত করতে বাধ্য হন লিজ। সপ্তাহের ব্যবধানে ২ বিশ্বস্ত মন্ত্রীকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে যান তিনি। 

৪৭ বছর বয়সী লিজ ট্রাস অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। অক্সফোর্ডে পড়ার সময় লিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের সভাপতি হন। ১৯৯৪ সালে দলের সম্মেলনে তিনি রাজতন্ত্র বাতিলের স্বপক্ষে বক্তব্য দিয়ে সাড়ে ফেলেন।

তার রাজনৈতিক যাত্রা বেশ বৈচিত্র্যময়। তিনি তার পূর্বসূরির মতো ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে সুপরিচিত নন। এমন কী, কনজারভেটিভ টোরি দলের সংসদ সদস্যদের কাছেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার ছিলেন না।

তবে কনজারভেটিভদের মৌলিক মূল্যবোধগুলোতে ফিরে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, অর্থাৎ, কর কর্তন ও রাষ্ট্রের ক্ষমতা কমিয়ে জনগণের ক্ষমতা বাড়ানো, তা দলের সদস্যদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়ে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের ভোটেই বরিস জনসনের বদলে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন লিজ ট্রাস। 

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

10h ago